খাওয়ার সময় শিশুদের টিভি – মোবাইল থেকে দূরে রাখুন

বেশিরভাগ মায়েদের জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে, বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময় বড়ই অশান্তির মধ্যে পড়েন তাঁরা। শিশুরা খাওয়ার সময়ই তাকিয়ে থাকে টিভির দিকে কিংবা মোবাইল হাতে নিয়ে বসে থাকে। সামান্য পরিমাণ খাওয়া-দাওয়াতেই কেটে যায় ঘণ্টার পর ঘন্টা। কেউ কেউ তো খাওয়া বন্ধ করে একেবারে অন্যজগতে চলে যায়।

অনেক সময়ই দেখা যায় কিছু কিছু বাচ্চা টিভি ছাড়া খেতে বসেই না। এক দৃষ্টিতে স্ক্রিন উপভোগও চলছে আবার মুখ নাড়িয়ে খাওয়াও চলছে। কিন্তু এটি আপনার বাচ্চার জন্য বেশ ক্ষতিকর। যেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে ওদের নিজেদের খাওয়া অভ্যাস করান। নিজে হাতে খেতে শিখলে এই সমস্যার আপেক্ষিক সমাধান একটু হলেও সম্ভব।

প্রথমেই নিজেকে বদলান। অনেক বাড়িতেই অভিভাবকরা নিজেরাই টিভির সামনে বসে খাওয়াদাওয়া করেন। নিজেরা পরিবর্তনের সঙ্গেই আপনার শিশুও পরিবর্তন হবে। কথায় বলে, বাবা-মা যেমন পথ দেখিয়েছেন তেমনই হবে, তাই নিজেরা সতর্ক থাকুন। বাচ্চার রোল মডেল হয়ে উঠুন।

নির্দিষ্ট একটি খাবারের জায়গা আছে আপনার বাড়িতে? তাহলে সেটির বন্দোবস্ত আগে করুন। ডাইনিং টেবিল এলাকায় রঙিন কিছু অবজেক্ট রাখার ব্যবস্থা করুন। নানান ফুল, ফল ইত্যাদির ছবি হোক কিংবা যা আপনার শিশুর পছন্দ। একটি উঁচু চেয়ার রাখুন যাতে আপনার সঙ্গে কথোপকথন বজায় থাকে।

বাচ্চাদের ঘরে টিভি একদম রাখবেন না। যাতে শোয়ার সময় কিংবা খাওয়ার সময় ওই সংস্পর্শে না আসে সেদিকে নজড় দিন। আরামদায়ক বিছানা এবং ভাল গল্পের বই পড়ে শোনান।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাবার শেষ করার এক নিয়ম বিধি চালু করুন। সেই সময়ে চেষ্টা করবেন গ্যাজেটস থেকে ওদের দূরে রাখতে।

বাচ্চাদের সঙ্গে খেলাধুলায় অংশ নিন। ওদের সঙ্গে মেলামেশা গাঢ় করে তুলুন। টিভি দেখার আসক্তি থেকে বের করতে প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার প্রয়োজন আছে।

খাওয়ার সময় শিশুদের টিভি দেখার পরিবর্তে ওদের ছড়াগান শোনান, কার্টুন গল্প মুখে বলুন যাতে ওরা আগ্রহী হয়। বাচ্চাদের মনোযোগ এতে সহজেই আকর্ষিত হবে।

সারাদিনে সময় বেঁধে দিন। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই টিভি দেখার সুযোগ রয়েছে আপনার শিশুর। ওদের কাজে ডুবিয়ে রাখতে পাজেল দিতে পারেন, কিংবা দাবাও ভাল অপশন।

সবশেষে বাবা মা হিসেবে ওদের সঙ্গে সময় কাটান। ওদের মনের কথা বোঝার চেষ্টা করুন। শিশুসুলভ আচরণ না করলে ওরা নিজেরাও মেলে ধরতে পারবেন না। নিজের ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও সময় বের করতেই হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *