অসুখ সারাতে সাহায্য নিন গান থেরাপির , দেখে নিন

পছন্দের সুরে মন ভাল হয়। গানের ধরণ অনুযায়ী কখনও শান্ত হয় তো কখনও চনমনে হয়। কিন্তু সে যে আবার অসুখবিসুখও সারাতে পারে, সে কথাও মানেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের মতে, তেমন ভাবে শোনাতে পারলে হতাশার রোগী ভুলে যেতে পারেন তার কষ্টের কথা, ব্যাথা বেদনায় ভারাক্রান্ত মানুষ সাময়িক ভাবে হলেও চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারেন।অনিদ্রার রোগীর চোখে নেমে আসতে পারে শান্তির ঘুম।চিন্তায় জেরবার মানুষ খুঁজে পেতে পারেন তার সমস্যার সমাধান।

কারণ, পছন্দের গান বা সুর সোজা গিয়ে হানা দেয় মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস নামের অংশে। যা কিনা সব আবেগের কেন্দ্র। পছন্দের গানে তারা উদ্দীপিত হয়। এনআইবিপি নামের মনিটর লাগালে ধরা পড়ে সেই উদ্দীপনা। প্রবল ব্যথায় বা টেনশনে যে হৃদস্পন্দন, নাড়ির গতি ও রক্তচাপ বেড়ে থাকে, তারা সব কমতে শুরু করে। এক আধ বারেই কষ্ট একেবারে কমে যায় এমন নয়, তবে সুরের জগত্‍কে আপন করে নিতে পারলে ওষুধের মাত্রা কমে যায়।

এরই নাম মিউজিক বা গান থেরাপি।
মারাত্মক মানসিক চাপ ও টেনশন চলতে থাকলে সুরে ডুবে যাওয়া একটু কঠিন। কিন্তু কোনও মতে ডুবে যেতে পারলেই হল। আঠার মতো লেগে থাকা স্ট্রেস হরমোনকে সরিয়ে মন ভাল করা হরমোনরা ক্ষরিত হয়। তাতে সাময়িক ভাল লাগা যেমন হয়, কমে উচ্চ রক্তচাপ নিদ্রা ও দীর্ঘমেয়াদি অসুখের প্রকোপ।বড় ধরনের হতাশায় ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে মিউজিক থেরাপি করলে আশাতীত ফল পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, হসপিটাল সিকনেসের প্রকোপ কমাতে মিউজিক থেরাপি একাই একশো। সেরিব্রাল পাল্সি, অটিজম ও পক্ষাঘাতের শুরুতে অন্যান্য চিকিত্‍সার সঙ্গে মিউজিক থেরাপি করলে ভাল ফল হয়। লাভ হয় বাতের চিকিত্‍সাতেও। এমনকী, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো কষ্টকর অসুখেও তার ভূমিকা আছে। নিয়মিত থেরাপি নিলে এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো বাড়িতে তার প্রয়োগ করলে ক্রনিক ব্যথার রোগীদের কাছে খুলে যায় এক নতুন দিগন্ত।

কোন অসুখে কোন গান?

থেরাপির ক্ষেত্রে কী গান বা সুর শুনবেন তা নির্ভর করবে আপনার ব্যক্তিত্ব ও কী সমস্যায় ভুগছেন তার উপর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে আহির ভৈরব এবং টোড়ি, নিম্ন রক্তচাপে মালকোষ, মাথাব্যথায় দরবারি কানাড়া ও জয়জয়ন্তী, ঘুম পাড়াতে বাগেশ্রী ও দরবারি কানাড়া, টেনশন কমাতে দরবারি কানাড়া খাম্বাজ এবং পুরিয়া খুব কার্যকর। উচ্চাঙ্গ সংগীতে আগ্রহ থাকলে এ সব শুনতে পারেন। তা সম্ভব না হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো লিস্ট করে নিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *