বর্গী হানায় জেরবার বাংলা
তখন বর্গী হানায় জেরবার বাংলা। প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে অনেকেই বাড়িঘর, ধন-সম্পত্তি, ছেড়ে সপরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পা বাড়িয়েছেন।
তখন বর্গী হানায় জেরবার বাংলা। প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে অনেকেই বাড়িঘর, ধন-সম্পত্তি, ছেড়ে সপরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পা বাড়িয়েছেন। সময়টা ছিল শরৎ কাল। সে বার বর্গী হামলার আশঙ্কায় বর্ধমান জেলার কাটোয়ার সকলেই আতঙ্কে সন্ত্রস্ত। তবু অটুট ভক্তি ও আস্থা সম্বল করেই পারিবারিক দুর্গোৎসব বন্ধ না রাখার সিদ্ধান্ত নিল কালনার নৃপপল্লির চট্টোপাধ্যায় পরিবার।রীতি মেনে শুরু হয় পুজো। তারপর হঠাৎ একদিন পুজোর রাতেই ঘটে বর্গী আক্রমণ। বাড়ির মহিলারা তখন কালো হাঁড়ি মাথায় নিয়ে বাড়ির পাশে পুকুরে লুকিয়েছিলেন। পুরুষরা গা-ঢাকা দিয়েছিলেন আশপাশে কোথাও।
তবু দৈব কৃপায় কারও প্রাণহানি বা পুজোয় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। নির্বিঘ্নেই মিটেছিল সে বারের পুজো। বর্তমানে পুজটি চরণ দাস চট্টোপাধ্যায় এর পূজো বলে পরিচিত। পরবর্তীকালের একটি কাহিনী প্রচলিত আছে সে সময় সত্য সতীদাহ প্রথা রদ করেছে ইংরেজ সরকার তার কল্যাণে এই পরিবারের দুই বধু অন্যবেলা দেবী ও পূণ্যবালা দেবী ক্ষতি হওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন সেই খুশিতেই পরিবারের প্রচলিত দূর্গা পুজো তারা সরম্বর পালন করেছিলেন।
এবাড়ির পুজোয় রয়েছে কিছু ব্যতিক্রমী আচার অনুষ্ঠান কালিকাপুরান মতে অনুষ্ঠিত পুজোর কদিন ভোর চারটে নাগাদ হয় মঙ্গল আরতি এরপরে হয় বাল্য ভোগ, তাতে থাকে নাড়ু মাখন মিছরি তারপরে হয় মন পুজো অন্য ভোগ থাকে সাদা ভাত, সুক্ত, নরকম ভাজা, কুমড়ো দিয়ে পুরের ভাজা, খিচুড়ি, পুষ্পান্ন, ডালনা চাটনি পায়েস নবমীতে মাছের ঝোল টক ঝাল পুঁইশাকের চচ্চড়ি, বিভিন্ন রকম উপকরণ দিয়ে মাকে ভোগ দেওয়া হয় এখনো সকল রীতির ওয়াজ মেনেই আগের মতন পুজো হয় পুজোতে আমন্ত্রিত থাকে আশেপাশের বহু মানুষ দুবেলা তাদের পাত পেরে খাওয়ানো হয়