ভিক্ষা করে মুড়ি খেয়ে পাগল ছেলেকে নিয়ে ৮ বছর বেঁচে আছে মালতি কর্মকার

দক্ষিণ ২৪ পরগণা :- ৫৫ বছরের এক বৃদ্ধা, দুটো চোঁখ ছানিতে নষ্ট।একটা চোঁখে সামান্য দেখতে পায়।ছেলে তার পাগোল,,,, ছেলের বয়েস এখন ৪৫,, মা ও ছেলের এই করুন কাহিনী আজ আপনাদের কে দেখাবো।বৃদ্ধার নাম মালতি কর্মকার,ছেলের নাম গৌতম কর্মকার। মালতি কর্মকার যখন দেখতে পেতো ,তখন ছেলেকে ভালো করার জন্য বিভন্ন জায়গাতে ছুটেছে। তখন মালতি দেবীর চলার ক্ষমতা ছিলো , একসময় শিয়ালদা নিলরতন হসপিটালে ৫বছর এক টানা ছুটে ছুটে ছেলের জন্য অষুধ এনে খাওয়াতো।

তখন অষুধ খেয়েএকটু ভালো ছিলো তার ছেলে গৌতম। মালতি দেবীর চোঁখ খারাপ হয়ে যাওয়ায়, আর তিনি যেতে পারেন নি হসপিটালে অষুধ আনতে। মালতি দেবীর ছেলেকে আর ভালো করা হলো না ।এই ভাবে চলে গিয়েছে ৮বছর।এখন বাম দিকের এক চোঁখ তার অন্ধ, ডান চোঁখে হালকা দেখতে পায়।ছেলের মুখে দুটো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য মালতি দেবীর যেতে হয় তিন কিলোমিটার রাস্তা পারি দিয়ে,পায়ে হেটে পিয়ালী ষ্টেশনে ভিক্ষে করতে। তার বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার ইটের সলিং রাস্তা।

এই বর্ষায় রাস্তায়র উপরে জল কাঁদা।সেই জল কাঁদা পারি দিয়ে প্রতিদি পায়ে হেটে ছেলের মুখে একটু অন্যে তুলে দেওয়ার জন্য মালতি দেবী স্টেশনে যায় ভিক্ষে করতে। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ মুড়ি আর পচা পেকচো কলা খেয়ে তার জীবন চলছে।ভিক্ষে করে যেটুকু পায় মুড়ি আর কলা কিনে নিয়ে এসে তার ছেলেকে খাওয়ায় সে নিজেও খায়।যদি ভিক্ষে করে টাকা পায় ,তবেই কাঠ ও চাল কেনে।সেটাও আতপ চাল । সেই চাল ভিজিয়ে রাখে যখন চাল ফুলে ভাতের মতো হয় , তখন একটু গরম করে তার ছেলেকে খাওয়ায় মালতি দেবী।

করোনার জন্য দুবছর স্কুল বন্ধ।তার ফলে মালতি দেবীর আরো কষ্ট।ওখান কার আসে পাশের গ্রাম বাসীরা বলেন, স্কুলে যখন রান্না হতো, তখন মা ও ছেলের ভাত দুপুরে ওখান থেকে পেতো, এখন স্কুল বন্ধ, মালতি দেবীর খাওয়া এই দুবছর বন্ধ। এখন ভিক্ষে করে যা পায় তাতেই মুড়ি কিনে আনে। ছেলে গৌতম কর্মকার সারাদিন স্যাতসেতে মেঝেতে শুয়ে থাকেন।

বছরে এক দিনও সে স্নান করে না।ক্লাবের ছেলেরা কোনো ভাবে তার একটু মাথা গোজার জায়গা করে দিয়েছিলো, সেই ঘরেই এখন মালতি কর্মকার ও তার পাগল ছেলেকে নিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর মুড়ি খেয়ে জীবন বাঁচাতে মরিয়া। সামনেই পুজো ,পুজোতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়, কিন্তু এই সব অসহায় মানুষদের জন্য কেউ এগিয়ে আসে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *