এলাচ চাষ করে আয় করুন

হালকা রোদ্র-ছায়া,উর্বর মাটি  যুক্ত জায়গায় এলাচ গাছ ভালো জন্মায়।স্যাঁতস্যাঁতে জায়গার মধ্যে এলাচ গাছের ফলন ভালো হয়। এলাচ চাষের আলাদা কোনো জমির প্রয়োজন হয় না।অন্য ফসলের মাঠে এলাচ চাষ করলে ফলন ভালো পাওয়া যায় না।

আমাদের রাজ্যে এলাচ খুব বেশি পরিমানে চাষ না হলেও দেশে এবং বিদেশে শীতপ্রধান অঞ্চলে এটি প্রচুর জন্মায়। ছোট ও বড় উভয় প্রকারের এলাচ উৎপাদনের জন্য দেশের পরিবেশ, জলবায়ু এবং আবহাওয়া উপযোগী।

এলাচের চাষের জমি-

হালকা রোদ্র-ছায়া,উর্বর মাটি  যুক্ত জায়গায় এলাচ গাছ ভালো জন্মায়।স্যাঁতস্যাঁতে জায়গার মধ্যে এলাচ গাছের ফলন ভালো হয়। এলাচ চাষের আলাদা কোনো জমির প্রয়োজন হয় না।অন্য ফসলের মাঠে এলাচ চাষ করলে ফলন ভালো পাওয়া যায় না।

চারা রোপণের দূরত্ব ও রোপনের হার –

লাচের চারা লাইনে রোপণের জন্য চারা থেকে চারার দুরত্ব হবে  ৪ হাত এবং লাইন থেকে লাইনের দুরত্ব হবে ৩.৫ ( সাড়ে তিন) হাত।  এই  দূরত্ব অনুসারে এলাচের চারা রোপণ করা ভালো।বিঘা প্রতি ( ৩৩ শতকে ) ৪৬০ টি চারা রোপণ করা যায়।

জমি তৈরি ও সার ব্যবস্থাপনা –

এক বিঘা বা তার উপরে জমি তৈরি করতে হলে সরকারি মাটি পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে মাটি পরীক্ষা করে নিতে হবে। মাটির ৩ ধরনের পরীক্ষা করে নিতে হবে (1) মাটির পিএইচ (2) মাটিতে বলি বা স্যান্ডের পরিমাণ  (3) মাটিতে জৈব উপাদানের পরিমাণ – এই ৩ টি তথ্য অবশ্যই জানতে হবে।এলাচ উৎপাদনে তেমন কোন খরচ হয় না। শুধু মাত্র প্রথম বছরে চারা কেনার খরচ হয়,পরের বছরগুলোতে আর চারার টাকা লাগে না।মাটিতে পিএইচ এর পরিমাণ ৬ এর বেশি হলে মাটির সাথে পরিমাণ মতো চুন মিশাতে হবে। যদি এটেল মাটি হয় এবং জমিতে বালির পরিমাণ কম থাকে তাহলে অতিরিক্ত বালি মেশাতে হবে। কিন্তু দোআঁশ মাটিতে কোন কিছু করতে হবে না।

জমি তৈরির সময় চাষের সঙ্গে টিএসপি, প্রতি শতকে মাটিতে ৫০০ গ্রাম, পটাশ প্রতি শতকে ৫০০ গ্রাম। দানাদার কীটনাশক যেমন (ফুরাডান বা কার্বফুরান) ১ বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে ২ কেজি পরিমাণ প্রয়োগ করতে হবে। তারপর ১ দিন পর সেচ দিয়ে জমি ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। যেন জমির সাথে সারগুলো ভালোভাবে মিশে যেতে পারে। ভালো ফলন পেতে হলে এর ১৪ দিন পরে ২ ফিট চওড়া ও দেড়ফিট গভীর গর্ত করে গোবর সার বা জৈব সার প্রয়োগ করে সাথে দানাদার কীটনাশক ( প্রতি গর্তের গোবরের সাথে ২০০ গ্রাম ) অবশ্যই দিতে হবে।এছাড়াও চারা রোপণের ২০-২৫ দিনের মধ্যে একই হারে ইউরিয়া- পটাশ সার দিতে হবে। তবে পরবর্তীতে কেবল ডিএপি সার প্রযোজ্য।

 সতর্কতা –

  • অতিরিক্ত জল জমিতে জমে থাকলে ড্রেনের ব্যবস্থা করে পানি নিস্কাশন করতে হবে।
  • ঘন বর্ষায় চারা লাগানো যাবে না।
  • জমিতে জল জমে থাকতে দেওয়া যাবে না।চারা রোপণের পর জমিতে সেচ দিতে হবে।
  • কার্বান্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক জলের সাথে পরিমাণমতো মিশিয়ে গাছের একেবারে গোড়ায় স্প্রে করতে হবে চারা রোপণের পর পর ।

    ফলনঃ-

    চারা রোপণের ২য় বৎসরে কিছু গাছে এলাচ ধরা শুরু করলেও রোপণের ৩য় বৎসর থেকে এলাচের গাছে ফলন দেওয়া শুরু হবে। প্রায় প্রতি ঝোপ থেকে ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম এমনকি ১ কেজির উপরে ফলন পাওয়া যাবে। ৩ বৎসর পরে ১ বিঘা বা ৩৩ শতক জমি থেকে ৯০০ থেকে ১০০০ কেজি বা ১ টন ফলন পাওয়া যাবে। সেই হিসাবে ১ বিঘা জমি থেকে বছরে ১০ লক্ষ টাকার এলাচ উৎপাদন করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *