Covid সংক্রমণ রোধে ‘টিকা উত্‍সব’

দেশে উদ্বেগজনকভাবে কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে। রবিবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা একলাফে দেড় লাখ ছাড়িয়েছে। এই অবস্থায় সংক্রমণ রুখতে ‘টিকা উত্‍সব’-এর আয়োজন করেছে কেন্দ্র। আর এই টিকা উত্‍সবের সূচনায় দেশবাসীর কাছে ৪টি আবেদন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

টুইটে এই আবেদন করেন মোদী। তিনি লেখেন, ‘আজ থেকে ভারতে টিকা উত্‍সব শুরু হচ্ছে। করোনার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে আমি দেশবাসীর কাছে ৪ আবেদন করতে চাই।’ প্রধানমন্ত্রীর কী কী এই আবেদন-, ‘প্রত্যেকে একজনকে টিকা দিন, প্রত্যেকে একজনের চিকিত্‍সা করুন, প্রত্যেকে একজনকে বাঁচান, মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন তৈরি করুন’।

১১ এপ্রিল, রবিবার থেকে শুরু হওয়া এই টিকা উত্‍সব চলবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। এই ৪ দিনে সব রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যত বেশি সম্ভব মানুষকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। যাঁরা যোগ্য তাঁদের দ্রুত টিকা নিয়ে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মোদীও।

ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রাজ্য এই উত্‍সবে এগিয়ে এসেছে। যেমন উত্তরপ্রদেশ সরকার ৬ হাজার টিকাকরণ কেন্দ্র চালু করেছে। অন্যদিকে বিহার সরকার জানিয়েছে, ৪ দিনে ৪ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। যদিও মহারাষ্ট্র, পঞ্জাবের মতো কিছু রাজ্য অভিযোগ করেছে তাদের কাছে পর্যাপ্ত টিকা নেই। অনেক টিকাকরণ কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। অবশ্য এই সব অভিযোগ খারিজ করে কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশে টিকার কোনও ঘাটতি হবে না। ঠিক সময়ে পর্যাপ্ত টিকা পাবে সব রাজ্য। তাই তারা অভিযোগ না করে টিকাকরণের দিকেই বেশি নজর দিক।

এদিকে, ভারতে ভয়ঙ্করহারে ছড়াচ্ছে করোনা। রোজই রেকর্ড হারে বাড়ছে করোনার গ্রাফ। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লক্ষের বেশি। দেশে দৈনিক সংক্রমিত ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৮৭৯ জন। যা গতদিনের তুলনায় সাড়ে সাত হাজার বেশি। উদ্বেগ বাড়িয়ে কমছে সুস্থতার হার। গত ২৪ ঘন্টায় করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯০ হাজার ৫৮৪ জন। বর্তমানে ভারতে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ১১ লক্ষ ৮ হাজার, ০৮৭ জন। বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গতদিন করোনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৭৯৪ জন, এদিন সেই সংখ্যা ৮৩৯।

বাড়তে বাড়তে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ কোটি, ৩৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৮০৫ জনে। করোনাকে জয় করেছেন মোট ১ কোটি ২০ লক্ষ ৮১ হাজার ৪৪৩ জন। প্রাণ গিয়েছে ১ লক্ষ ৬৯ হহাজার ২৭৫ জনের।

দেশে মোট টিকাকরণ হয়েছে ১০ কোটি ১৫ লক্ষ ৯৫ হাজার ১৪৭।

ভারতে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে সংক্রমণ বাড়ছে ব্যাপকহারে। ভায়বহ পরিস্থিতি মহারাষ্ট্র, দিল্লি সহ দেশের একাধিক রাজ্যের। এই পরিস্থিতিতে করোনার গতি রুখতে শনিবার একগুচ্ছ বিধিনিষেধ জারি করেছে দিল্লি সরকার। সরকারের এই নির্দেশিকায় জনসমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি ছাড়াও রেস্তোরাঁ, থিয়েটার, গণ পরিবহণ ও বিয়ে, শেষকৃত্যর অনুষ্ঠানে জনসমাগমের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।এই বিধি আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। লাগু রয়েছে, রাত দশটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত নাইট কার্ফুর ঘোষণা করা হয়েছে। দিল্লিতে সমস্ত রাজনৈতিক, সামাজিক, খেলা, বিনোদন, পড়াশোনা, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। হাই গ্রেড ১ অফিসার ছাড়া সরকারি অফিসগুলিতে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *