ভোলা ময়রার নিখুঁতি

চলছে উৎসবের মরশুম ঐতিহ্য আর উৎসব যেনো মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে নদিয়ার শান্তিপুরে আসন্ন কালী পুজো

চলছে উৎসবের মরশুম ঐতিহ্য আর উৎসব যেনো মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে নদিয়ার শান্তিপুরে আসন্ন কালী পুজোর পরেই যে অনুষ্ঠানটির নাম করা যায় সেটা হলো ভাই ফোঁটা আর ভাই ফোঁটা মানেই বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির সমাহার সেই নানাবিধ মিষ্টির মাঝে নদিয়ার শান্তিপুর নামের সাথে জড়িয়ে রয়েছে নিখুঁতির নাম রসগোল্লার জন্য বাংলা যদি জি আই বা জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন বা ভৌগলিক ভাবে নির্দেশিত হতে পারে তাহলে নিখুঁতির জন্য শান্তিপুর জি আই নির্দেশিকা পাবে না কেনো?এই বিশেষ মিষ্টির রং পান্তুয়া এবং ল্যাংচার মতো , এবং এর আকৃতি অনেকটা হাতের আঙ্গুলের মতো।রানাঘাট মানে পান্তুয়া, বর্ধমান মানে সীতা ভোগ কৃষ্ণ নগর নামের সাথে জড়িয়ে রয়েছে সর পুরিয়া এবং সর ভাজা, অপর দিকে নদিয়ার শান্তিপুর নামের সাথে ওতোপ্রতো ভাবে জড়িয়ে নিখুঁতির নাম

ইতিহাস বিশ্লেষণ করে বলা যাচ্ছে প্রায় দুশো বছর আগে শান্তিপুর শহরে নিখুঁতি নামের এই মিস্টি তৈরির শুভ সূচনা হয়েছিল।শান্তিপুর এই বিশেষ মিষ্টি তৈরির সূচনা হয়েছিল শান্তিপুর কে সি দাস রোডে ভোলা ময়রার দোকান থেকে।বর্তমানে সেখানে মিষ্টির দোকান না থাকলেও এই প্রসিদ্ধ মিষ্টির জনক ভোলা ময়রার নাতি সুদীপ্ত কুমার ইন্দ্র জানাচ্ছেন ভোলা ময়রার একটি সুন্দরী কন্যা ছিল তার নাম ছিল নিখুঁতি সে তার বাবা অর্থাৎ ভোলা ময়রার অনুপস্থিতিতে মাঝে মাঝেই দোকানে বসতো একদিন ভোলা ময়রার অনুপস্থিতিতে তার কন্যা কিছুটা ছানা তুলে নিয়ে নিজের হাতেই লেচি পাকিয়ে তেলে ছেড়ে দেয় এরপর ভোলা ময়রা সেটা রসে ছেড়ে দিলে এই মিষ্টির নাম সেই ভোলা ময়রার মেয়ের নাম অনুযায়ী দেওয়া হয় নিখুঁতি এরপর অনেক মানুষই ভোলা ময়রার দোকান থেকে এই মিষ্টি কিনে নিয়ে গিয়ে পুনরায় সেই মিষ্টির খোঁজ করেন এবং ওই মিষ্টির নাম জানতে চান । যেহেতু ভোলা ময়রা কানে একটু কম শুনতেন

সেই কারণে তিনি মিষ্টির নাম জানতে চাইলে মিষ্টি নির্মাতার নাম বলে দিতেন , যার নাম ছিল নিখুঁতি।শান্তিপুর শহরে সর্ব প্রথম এই ভোলা ময়রার দোকান ছাড়া এই মিষ্টি পাওয়া যেত না , পরবর্তী কালে এই মিষ্টির চাহিদা ও জনপ্রিয়তা এতটা বাড়তে থাকে যে শান্তিপুরের সমস্ত মিষ্টি প্রস্তুত করোকেরা এই বিশেষ মিষ্ঠান্ন অর্থাৎ নিখুঁতি প্রস্তুত করতে থাকেন । একদিকে যখন নদিয়ার কৃষ্ণ নগর সর্পুরিয়া আর সর ভাজতে মজে উঠেছে অন্যদিকে শান্তিপুর মজেছে নিখুঁতিতে । এরপর এই নিখুঁতির স্বাদকে আরও অভিনব করে তুলতে গোল মরিচ এবং এলাচ মেশানো হয় এই বিশেষ প্রকার মিষ্টির সাথে যেটা অন্য কোনো মিষ্টির সাথে মেশানো হয় না ।শান্তিপুরের বাইরে থেকে যারা আসেন এই মিষ্টি তারা বাড়ি নিয়ে যান আবার অতিথি আপ্যায়নের ক্ষেত্রেও এই নিখুঁতির বিশেষ জনপ্রিয়তা রয়েছে । তবে করোনা পরিস্থিতিতে বিগত দুই বছর সামগ্রিক ভাবে মিষ্টি বিক্রিতে ভাঁটা পড়লেও এই বছর উৎসবের মরশুমে এই নিখুঁতির বিশেষ চাহিদা থাকবে বলে সাধারণভাবে অনুমান করা হচ্ছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *