জেনে নিন রুই কাতলা ও মৃগেল মাছ চাষের সঠিক পদ্ধতি
রাজিব মণ্ডল:-আমাদের দেশে দিন দিন মাছ চাষির সংখ্যা বাড়ছে। মাছ চাষের মাধ্যমে বেকারত্বও দূর হচ্ছে। তাই মাছ চাষ নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। মাছ চাষ করে দারুণ সফল হচ্ছেন চাষিরা।
রুই কাতলা ও মৃগেল এই তিন প্রকার মাছের চাহিদা প্রায় একই রকম ।কিন্তু এই তিনটি প্রজাতির খাদ্যাভ্যাস, বসবাস, আচার-আচরণ অনেকটাই আলাদা। রুই মাছ পুকুরের মধ্য জলস্তরে বিচরণ করে। ছোট অবস্থায় এরা প্রাণীকণা খায়। বড় হলে অর্থাৎ চারাপোনার পর থেকে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন বা উদ্ভিদকণা, প্রাণীকণা, জলজ উদ্ভিদের নরম পাতা, পচা গলা উদ্ভিদের অংশ ইত্যাদি খায়।
কাতলা মাছ, মৃগেল মাছ পুকুরের উপরের জলস্তরে থাকে। ছোট অবস্থায় প্রাণীকণা খায় কিন্তু বড় হলে উদ্ভিদকণা, প্রাণীকণা, শ্যাওলা, প্রদত্ত খাবার ইত্যাদি খায়। মৃগেল মাছ পুকুরের তলদেশে থাকে। ছোট অবস্থায় প্রাণীকণা খায়। বড় হলে উদ্ভিদকণা, প্রাণীকণা, শ্যাওলা, পচাগলা প্রদত্ত খাবারের সঙ্গে নরম কাদামাটিও খায়।
পুকুরে পোনা মজুদের আগে অবশ্যই পুকুর ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। মাছের শারীরিক বৃদ্ধির স্বার্থে পুকুরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ প্রাকৃতিক খাবার তৈরি নিশ্চিত করতে হবে।
পুকুরে অনেক মাছ জন্মায় বা কোনও ভাবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্রবেশ করে যারা মাছ চাষে ক্ষতি করে। অনেক রাক্ষুসে মাছ আছে যারা চাষের মাছকে বিভিন্ন বয়সে খেয়ে ফেলে। এদের নিধন করা দরকার। পুকুরে মহুয়া খোল প্রয়োগ করলে এর বিষক্রিয়ার ফলে সমস্ত আমাছা, ছোট বড় জলজ কীট সব মারা যাবে। বিঘা প্রতি সাধারণত ২০০ – ২৫০ কেজি মহুয়া খোল প্রয়োগ করা হয়।
অথবা বিষটোপ দিয়ে অবাঞ্ছিত মাছ দূর করে তার পরদিন পুকুরের তলদেশের অবস্থা বুঝে শতাংশপ্রতি আধা কেজি থেকে এক কেজি চুন দিয়ে এর ছয়-সাতদিন পর শতাংশপ্রতি শূন্য দশমিক ৩ মিলি পিপিএম হারে সুমিথিয়ন প্রয়োগ করতে হবে।
একদিন পর পুকুরে মাছের রেণু ছাড়তে হবে। আমাদের বর্তমান চাষ পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতি ৫০ শতাংশের পুকুরে মাছের রেণু দিতে হবে।
সময়মতো মাছ ধরা ও বিক্রয় করা মাছ চাষের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। অপেক্ষাকৃত বড় আকারের বিক্রয়যোগ্য মাছ ধরে বাজার জাত করা উচিত।