সাতসকালেই ফলন্ত তিন গাছের খুন
অন্ধকার কাটতেই কাকভোরে ইলেকট্রিক্যাল করাত, মোটর ভ্যান নিয়ে জল্লাদরা উপস্থিত শান্তিপুর শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের গৌড় দাসের বাগানে।
মাধব দেবনাথ.. অন্ধকার কাটতেই কাকভোরে ইলেকট্রিক্যাল করাত, মোটর ভ্যান নিয়ে জল্লাদরা উপস্থিত শান্তিপুর শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের গৌড় দাসের বাগানে। শব্দবিহীন ভাবেই ফলন্ত তিনটি আম গাছ লুটিয়ে পড়ল মাটিতে। জানা যায় স্থানীয় কিছু গাছ মাফিয়া বনদপ্তর এর বিনা অনুমতিতে ক্রমেই কাটছিলো গাছ। সকলেই তো আর দু এক হাজার টাকা জ্বালানি হিসেবে কিছু ডালপালা নেওয়ার লোভে মেরুদন্ড বিক্রি করে দেন না। এমনই এক প্রতিবেশীর তোলা ছবি পরিবেশ এবং গাছ কাটার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী পরিবেশ কর্মীদের দ্বারা প্রশাসনিক মহলে পাঠাতেই, তড়িঘড়ি শান্তিপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
তিনটি মোটর ভ্যান সমেত কাটা গাছের অংশ বাজেয়াপ্ত করে। এলাকার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন অনেকেই ঘটনার নিন্দা করলেও প্রকাশ্যে বলতে ভয় পাচ্ছেন। অর্থ বল এবং পেশী শক্তিতে সমৃদ্ধ গাছ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন এর আগে। প্রসঙ্গত এই 4 নম্বর ওয়ার্ডেই গোঁসাইবাগান বলে খ্যাত সুবিশাল বাগান শেষ হয়েছে। গড়ে উঠেছে জনবসতি এমনকি ইলেকট্রিক পানীয় জল অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা সবই মিলছে এখন। ওই ওয়ার্ডের ই আশেপাশের ছোট-বড়-মাঝারি এরকম প্রায় সাত থেকে আটটি বাগানে সবুজের বংশ নেই আর।
এলাকা সূত্রে জানা যায় প্রশাসনিক রাজনৈতিক উদাসীনতা শুধু তাই নয়, পরোক্ষভাবে তাদেরও একাংশ যুক্ত থাকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে। কে কোথায় ভোট দিতে পারে তার মূল্যায়ন হয় রাজনৈতিক নেতৃত্বর চুলচেরা বিশ্লেষণে অথচ বড় বড় বাগান কেটে সাফ হয়ে গেলেও উপস্থিত হতে দেখা যায় না জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বদের। গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান আত্ম উপলব্ধি বাদে এই উক্তি পরিণত হয়েছে স্লোগানে। যে গাছ লাগানো রয়েছে, তার সুরক্ষা কতটুকু? পরিবেশ কর্মীরা বলেন নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ধরনের কাজে এগিয়ে এসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিজেদের পরিবার, আগামী প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে পরিবেশ রক্ষার তাগিদে এগিয়ে আসতে হবে সাধারণ সচেতন মানুষ কে।
করোনার মধ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে হয়েছে অনেক কেই, তীব্র দাবদাহে কষ্ট পাচ্ছে সকলেই, সামান্য কিছু অর্থের লোভে বৃক্ষচ্ছেদন এখন শুধু গাছ মাফিয়াদের হাতেই সীমাবদ্ধ নেই, তাতে যুক্ত হয়েছে সাধারণ এক অংশের মানুষও। শান্তিপুর শহরের শুধু 4 নম্বর ওয়ার্ড নয়, সমগ্র শহর এবং গ্রামাঞ্চলে এভাবেই কোথাও রাতের অন্ধকারে কোথাও বা প্রকাশ্য দিবালোকে, বর্তমান যুব সমাজকে অর্থের লোভ দেখিয়ে অথবা প্রবীনদের মৃত্যু-হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ করে সবুজ ধ্বংস হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে ।