বাজি নিয়ে ফের মামলা হাইকোর্টে
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে মঙ্গলবার ফের কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বেআইনি বাজি (Firecrackers) বিক্রি বন্ধের আবেদন জানিয়ে পিটিশন দাখিল করলেন পরিবেশ কর্মী রোশনি আলি। তাঁর আবেদন, রাজ্যে সমস্তরকম বেআইনি বাজি বিক্রি বন্ধ করা হোক। পরিবেশবান্ধব ও শুধুমাত্র ‘পেসো’ দ্বারা স্বীকৃত বাজিই বিক্রি ও পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া হোক।
পরিবেশকর্মী রোশনির দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্ট সব রকমের বাজি পোড়ানো ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। হাইকোর্টের সেই রায় খারিজ করে সোমবারই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে বাজি পোড়ানো যাবে। তবে পরিবেশবান্ধব বাজি হলেই মিলবে অনুমতি। মামলাকারীর এই বিষয়ে ফের কোনও আর্জি থাকলে তা হাইকোর্টে পেশ করার অনুমতিও দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
তারই ভিত্তিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছেন রোশনি। শুনানি হবে আগামীকাল। হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চে মামলা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মামলাকারীর আবেদন, পরিবেশের ক্ষতি করে এমন বাজি বিক্রি বা পোড়ানো যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র সবুজ বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকার পোড়ানোরই অনুমতি দিয়েছে। কোন বাজি পরিবেশবান্ধব তা জানার জন্য নির্দিষ্ট পরিকাঠামো আছে। একটি অ্যাপও আছে যেখানে স্ক্যান করে সবুজ বাজি চিহ্নিত করা যায়।
মামলাকারীর আর্জি, রাজ্যে এই পরিকাঠামো উন্নত করা হোক। পেসো (পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি) দ্বারা স্বীকৃত বাজি বিক্রিরই অনুমতি দিক হাইকোর্ট। সেখানে সমস্ত রকম বেআইনি বাজি বিক্রিতে কড়াকড়ি করা হোক। কলকাতা হাইকোর্ট রায় দিয়ছিল সমস্ত রকম বাজি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। কালীপুজো, দীপাবলী কিংবা ক্রিসমাস, কোনও উত্সবেই বাজি ফাটানো বা বিক্রি করা যাবে না।
পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ যে পরিবেশ বান্ধব বাজি ফাটানোর কথা বলেছিল, তাও খারিজ করে দিয়েছিল হাইকোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়েছিল। মামলাকারী রোশনি আলির যুক্তি ছিল, করোনা সংক্রমণ এখনও গুরুতর পর্যায়ে রয়েছে বঙ্গে। এর মধ্যে দূষণও বাড়ছে। কাজেই বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ না করলে মানুষের জীবন ও পরিবেশের ওপর খারাপ প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে বাজির ধোঁয়ায় বয়স্ক ও শিশুদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে।
সঙ্কটাপন্ন রোগীরাও বিপদে পড়তে পারেন। গত বছরও হাইকোর্ট বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। মামলাকারীর আবেদন শুনে হাইকোর্টের বিচারপতিদের বক্তব্য ছিল, কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্ক রয়েছে। এমন অবস্থায় বাজি পোড়ানো বা বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া যায় না। তারপর গতকাল সুপ্রিম কোর্ট এই রায় খারিজ করে সবুজ বাজি পোড়ানোয় অনুমতি দেয়।