স্কুল খুললে মানতে হবে একাধিক নিয়ম , জানালো রাজ্য

এক বছরেরও বেশি সময় পরে অবশেষে খুলছে স্কুল। ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক, সকলের কাছেই এই খবর আনন্দের। স্বস্তির। কিন্তু এখনও তো আমাদের মাথায় করোনার খাঁড়া ঝুলছে। পুজোর পর থেকে রাজ্যে সংক্রমণ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা হলে কী কী নিয়ম মানতে হবে ছাত্রছাত্রীদের?কোন কোন ব্যবস্থা নিতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে? সেই সমস্ত নিয়ম-নীতি জানিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ নিয়ে তৈরি ২৮ পাতার বুকলেট প্রকাশ করল স্কুল শিক্ষা দফতর। স্কুল খোলার আগে প্রতিটি স্কুলে পৌঁছে যাচ্ছে এই ‘স্কুল রিওপেন বুকলেট’।

সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, কালীপুজো, ভাইফোঁটা, জগদ্ধাত্রী পুজো শেষ হতেই স্কুল খোলা হবে। ১৬ নভেম্বর থেকে খুলবে স্কুলের দরজা। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে। এরপর ধাপে ধাপে বাকিদেরও ক্লাস চালু হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই রাজ্যের শিক্ষা দফতর জেলাগুলিতে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কী ভাবে স্কুল খুলতে হবে।

মাঝে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। সেই সময় রাজ্যের তরফে গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়। এবারও একই গাইডলাইন প্রকাশ করা হল। মূলত এই গাইডলাইনে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীকে মাস্ক পরে স্কুলে আসতে হবে। সেই মর্মে বিদ্যালয়গুলিকে নোটিস জারি করতে হবে। এছাড়াও প্রতিটি স্কুলে একটি শয্যাযুক্ত আইসোলেশন রুম রাখতে হবে। আচমকা যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাকে যেন সেখানে স্থানান্তরিত করা যায়।

পাশাপাশি শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণেরও উল্লেখ রয়েছে এই স্কুল রিওপেন বুকলেটে। যাতে কারও জ্বর এলে বা অসুস্থ হলে প্রাথমিক ভাবে তা সামাল দিতে পারেন স্কুলে স্যার, দিদিমণিরা। আরও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরও উল্লেখ রয়েছে এই গাইডলাইন বুকে। বার বার শিক্ষাবিদ বা চিকিত্‍সকরা যেটা বলছিলেন, সম্ভব হলে দুই শিফটে ক্লাস হোক। এখানেও বলা হয়েছে, পরিস্থিতি ও পরিকাঠামোর দিকে নজর রেখে প্রয়োজনে স্কুল দুই শিফট অর্থাত্‍ মর্নিং ও ডে’তে ক্লাস করাতে পারে।

করোনার বিষয়ে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের সতর্ক করার দায়িত্বও স্কুলকেই দিয়েছে রাজ্য। করোনা সম্পর্কে অবহিত হতে হবে। কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না সে বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। ‘ডু অ্যান্ড ডোন্টস’-এরও একটি তালিকা রয়েছে বিকাশ ভবনের স্কুল রিওপেন বুকলেটে। সেখানে বলা হয়েছে, জ্বর হলে কোনও অভিভাবক যেন পড়ুয়াকে স্কুলে না পাঠান। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ক্লাস চলাকালীন একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর পর ক্লাসরুম, ল্যাব বা অন্যান্য ঘরগুলি স্যানিটাইজ করতে হবে।

চিকিত্‍সক সুমন পোদ্দার বলেন, “এবার বাবা মাকে খুব বেশি করে সতর্ক হতে হবে। ছেলে মেয়েরা বন্ধুদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যাচ্ছে, একই পাতে খাবার খাচ্ছে এগুলো যেন না হয়। হঠাত্‍ করে এখন লাগামছুট হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকবে। তা যেন কোনও ভাবেই অভিভাবকরা মান্যতা না দেন। মাস্ক, স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখতে হবে। স্যানিটাইজার জেল হলে সব থেকে ভাল।”

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আমাদের কাজ হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী যেমন বলেছেন, সেই মতো পরিকাঠামো দেখা।” এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছিলেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাঁর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *