পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় বিডিওর অভিযোগ দায়েরের পরই এলাকাছাড়া প্রধান

মালদাঃ-চার বছর কেটে গেলেও এখনো পাওয়া যায় নি বন্যায় ভেঙে যাওয়া ঘরের টাকা। বারবার তালিকা তৈরি হয়েছে। ঘরের জন্য মেম্বার থেকে প্রধান সবার কাছে দরবার করা হয়েছিল কিন্তু প্রতিশ্রুতি ছাড়া কোন কিছুই পাওয়া যায়নি। এদিকে বন্যায় ক্ষতি-পূরণের টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগ প্রধানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও অনির্বান বসু। অভিযোগ দায়ের হতেই স্বামী-সহ পলাতক প্রধান।আর এই খবর গ্রামবাসীদের কাছে আসতেই বুধবার এলাকায় বিক্ষোভ দেখালেন তারা। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক এলাকার বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গি গ্রামে। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে।

স্থানীয় সূত্রে খবর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের টাকার বেনিয়ম ধরা পড়ার পর ওই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় বিডিওর অভিযোগ দায়েরের পরই এলাকাছাড়া প্রধান। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ বেশ কয়েকদিন ধরে প্রধান পঞ্চায়েতে আসছেন না। ফলে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন রকম কাজ করাতে গিয়ে চরম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন এলাকাবাসীরা।

গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দ মোহাম্মদ আসিন জানান ২০১৭ সালে আমার ঘর বন্যায় নষ্ট হয়ে যায়। আমি এরপর থেকে বহুবার পঞ্চায়েত ব্লক অফিসে কাগজ পত্র নিয়ে দেখা করেছি। কিন্তু প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। শুনেছি আমাদের নামে টাকা এসেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এলাকার মেম্বার কিংবা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এ ব্যাপারে আমাদের কোনো সহায়তা করলো না।
বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান জানান ২০১৭ সালের বন্যায় এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ভীষণ ক্ষতি হয়েছিল। প্রচুর বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল তার সঙ্গে সঙ্গে অনেক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পঞ্চায়েতে ৬ জন মেম্বারের দ্বারা কমিটি গঠিত হয় ক্ষতি গ্রস্তদের তালিকা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছিল তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এলাকার প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এক টাকাও পাননি। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ এই বিষয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিল প্রধানের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার পরিপ্রেক্ষিতে কোন সুরাহা হয়নি। সম্প্রতি প্রশাসন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে থানায়। আমরা চাই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের অভিলম্বে টাকা প্রদান করা হোক এবং তার সঙ্গে সঙ্গে যারা এই টাকা নিয়ে বেনিয়ম করেছে তাদের আইনত শাস্তি দেওয়া হোক।

এ প্রসঙ্গে মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার জানান দল কোন দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। এই ব্যাপারে যদি কোন দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে দল সব সময় প্রশাসনের পাশে আছে। এই দুর্নীতিতে যেই জড়িত থাক তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। গরিবের টাকা নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলবে তাদের পাশে দল দাঁড়াবে না। আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বাংলা দরিদ্রদের জন্য অনেক রকম উন্নয়ন প্রকল্প আনছেন। তার মতাদর্শন অনুসারে কোন রকম দুর্নীতিকে বরদাশ্ত করা হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *