প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নিয়ে তোপ মমতার
দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে ডিগবাজি খেয়ে শেষ পর্যন্ত সোমবার পড়ন্ত বিকালে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তাঁর সেই ঘোষণাকে ‘মারহাব্বা-মারহাব্বা’ বলে প্রশংসায় যখন ভরিয়ে দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা, তখন পাল্টা আক্রমণের পথে গিয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। এদিন রাতেই প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে জোড়া টুইট করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলো, প্রধানমন্ত্রীর বিলম্বিত সিদ্ধান্ত অনেক প্রাণ কাড়ল।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন লণ্ডভণ্ড দেশ তখন র্বিকল্প সমাধিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যখন শহর থেকে গ্রামে গণচিতার ধুম, করোনার ছোবলে লাশের পাহাড় জমেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তখন ডাঙ্কাধিপতির কোনও সাড়া শব্দ শুনতে পাননি দেশবাসী। করোনার টিকা নিয়ে যখন হাহাকার দেশজুড়ে তখন কার্যত করোনা টিকার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তে চুপিসাড়ে শিলমোহর দিয়ে ‘বান্ধব’ ব্যবসায়ীদের হাজার-হাজার কোটি টাকা মুনাফা লোটার মতো সুযোগ করে দিয়েছেন স্বঘোষিত ফকির। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিরোধী দলগুলি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা দেশবাসীকে বিনামূল্যে করোনা টিকা দেওয়ার জন্য ধারাবাহিক দাবি জানিয়ে এসেছিলেন। এমনকী সোনিয়া গান্ধি সহ দেশের ১২টি বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরাও একই দাবি জানিয়ে মোদিকে চিঠিও দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চিঠি নিয়ে কোনও সাড়া শব্দ করেননি ডঙ্কাধিপতি। সম্প্রতি দেশের শীর্ষ আদালতেও কেন্দ্রের করোনা নীতি সমালোচনার মুখে পড়েছিল।
দেশে করোনার সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পরে এদিন ফের জাতির সন্মুখে হাজির হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষুব্ধ দেশবাসীর মন পেতে বিনামূল্যে করোনা টিকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। সেই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে লিখেছেন, ‘গত ২১ ফেব্রুয়ারি এবং তার পরেও বহুবার বিনামূল্যে সকলকে টিকা দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁর এই সিদ্ধান্ত নিতে তাঁর ৪ মাস লাগল। আমাদের দীর্ঘদিনের এই দাবি শেষ পর্যন্ত তিনি শুনলেন। অতিমারীর শুরু থেকেই মানুষের সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখা উচিত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দেরীতে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বহু মানুষের প্রাণ গেল। আশা করছি এবার করোনার টিকাকরণ কর্মসূচি সঠিকভাবে হবে। নির্দিষ্ট কোনও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে টিকাকরণ হবে না বলে আশা করছি।