অন্য ধারার সরস্বতী পুজো
১১৫ বছর আগে এক অন্য ধারার সরস্বতী পুজো শুরু হয়েছিল এই গ্রামে। বাকিটা ইতিহাস। কেমন অন্যরকম? প্রথমত এখানে পূজিত হন ‘জোড়া সরস্বতী’। দ্বিতীয়ত এর পূজা পাঠ। কোনওদিন শুনেছেন ঢাক ঢোল বাদ্যি বাজিয়ে চার দিন ধরে কোথাও সরস্বতী বন্দনা হচ্ছে? না শুনবেন না। পাড়ার ক্লাবেও হয় না। পুজো দেড় দিনের। তারপরে সময় মতো ঠাকুর বিসর্জন হয়। মেরেকেটে আরও একদিন। কিন্তু চার দিন তাও মহাধুমধামে। এটাই হয়ে ১১৫ বছর ধরে হয়ে আসছে সোনামুখী গ্রামের দে পরিবারে।
পুজো শুরু করেছিলেন অধরচন্দ্র দে মহাশয়। একই কাঠামোয় সরস্বতী এবং লক্ষ্মী শুরু করেছিলেন তিনি, একেই পরিবার জোড়া সরস্বতী বলে আখ্যা দিয়েছে। অধরচন্দ্র মহাশয় শুধু দুই বোন নয়, ভাইদেরকেও রেখেছিলেন। একসঙ্গেই পুজো হয় তাঁদেরও। তবে মূল আকর্ষণ লক্ষ্মী এবং সরস্বতীর সহাবস্থান। এমনটাই জানাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।
১৩১৩ বঙ্গাব্দ আকাশে সেদিন সূর্যকে গিলে খেয়েছে রাহু। লেগেছে গ্রহণ। অন্ধকার পৃথিবী। অন্যদিকে আবার মকর সংক্রান্তি। এক অদ্ভুত দিন। এমন দিনেই লক্ষ্মী – সরস্বতী একযোগে মন্দির তৈরির কাজ সম্পন্ন করলেন অধরচন্দ্র দে মহাশয়। সেই থেকেই দে পরিবারে এক কাঠামোয় লক্ষ্মী সরস্বতীকে রেখে শুরু হয় সরস্বতী পুজো। পরিবারের সদস্য সুমন্ত দে বলেন, ‘আমাদের পুজোর প্রথম বিশেষত্ব অবশ্যই জোড়া সরস্বতী দ্বিতীয় হল দে বাড়ির পুজো এক দিন নয় টানা চার দিন ধরে মহাসমারোহে পালিত হয়। সঙ্গে ঢাক ঢোল বাদ্যি বাজিয়ে হয় পুজো। পাশাপাশি কুলদেবতা দামোদর জিউয়েরও পুজো হয় এই ক’দিনে। সুমন্ত বলেন, “আমাদের দামোদর জিউয়ের জন্য আলাদা মন্দির রয়েছে। সরস্বতী পুজোর সময় ওনাকে আনা হয় সরস্বতী-লক্ষ্মীর ঠাকুর দালানে। আবার চারদিন পর পুজো শেষ হলে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নিজ গর্ভগৃহে।’
“সোনামুখী আসলে বাঁকুড়া এবং বর্ধমানের মাঝে একটি অঞ্চল। সেখানকার জমিদার ছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষরা। আমরা জাতিতে পোদ্দার এবং পেশায় স্বর্ণকার। তাই পুজোয় আমাদের অন্ন ভোগ দেওয়া হয় না।’
Excellent read, I just passed this onto a colleague who was doing some research on that. Sidney Alvara