বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে বিশেষ পুজোর মধ্য দিয়ে নবান্ন উত্সবের সূচনা
রীতি মেনে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে বিশেষ পুজোর মধ্য দিয়ে নবান্ন উত্সবের সূচনা হল। এই মন্দিরে পুজোর পর নবান্ন অনুষ্ঠিত হয় রাজ্যের শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলায় (Bengal Nabanna Festival)। বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা।লক্ষ্মীরূপিনী মা সর্বমঙ্গলাকে রাঢ়বঙ্গের দেবী বলা হয়। তাই বর্ধমান-সহ রাঢ়বঙ্গের বাসিন্দাদের অনেকেই প্রথম সর্বমঙ্গলা মন্দিরে নবান্ন উত্সব পালন করেন (Bengal Nabanna Festival )।
নবান্ন উপলক্ষ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে রবিবার সকাল থেকেই অগণিত ভক্তের ভিড় ছিল মন্দিরে। নতুন চাল, ফুলকপি, বাঁধাকপি-সহ নানান ফল তাঁরা দেবীকে নিবেদন করেন। ভাত ডাল পোলাও পায়েশ-সহ ১৩ রকমের ভাজা দিয়ে মায়ের নবান্নের বিশেষ ভোগ হয়। শেষ পাতে ছিল মাছের টক। অনেকেই মন্দিরে মালসায় অন্নভোগ নিয়ে বাড়ি যান।
এরপর নতুন চালে তৈরি হবে নলেন গুড়ের পায়েস, পিঠে পুলি। নবান্ন উপলক্ষে বর্ধমানের অনেক গ্রামেই মেলা, যাত্রার আসর বসে। তবে করোনার কারণে সেসব এখন বন্ধ। সোনা রঙের ধান মাঠ থেকে ঘরে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল জোর কদমে। বৃষ্টিতে সেই কাজ থমকে গিয়েছে। সেই ধান থেকে চাল তৈরি করে নিবেদন করা হবে মা লক্ষ্মীকে। তৈরি হবে নতুন চালের নানান খাবার।
বাঙালির বারো মাসে তের পার্ব্বন। তার ওপর শীত মানেই তো উত্সবের মরশুম। ঋতু বৈচিত্র্যের হাত ধরে শরতের পরে আসে হেমন্ত। সেই হেমন্তে কৃষি ভিত্তিক পূর্ব বর্ধমান জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন লোক উত্সব নবান্ন। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবার ধানের ফলন বেশ খারাপ, তার জেরে জৌলুস কমেছে নবান্নের আয়োজনে।
রাজ্যের তো বটেই, দেশের সবচেয়ে বেশি ধান উত্পাদক জেলাগুলির অন্যতম পূর্ব বর্ধমান। অগ্রহায়ন মাসে আমন ধান ঘরে তোলার সময় পালিত হয় নবান্ন। ধান ঢেঁকিতে ভেঙে তৈরি হয় চাল। সেই নতুন চাল, আখ, খেঁজুর, কলা, কমলালেবু, নলেন গুড়ে মেখে সর্ব প্রথম মা লক্ষ্মীকে নিবেদন করা হয়। ধান কাটার আগে সুন্দর ভাবে নিকোনো হয় উঠোন। বাড়ির দেওয়ালে আলপনা আঁকেন মহিলারা।