লেপাক্ষী মন্দিরের বিস্ময়কর স্থাপত্য ঝুলন্ত থাম, নীচ দিয়ে গলে যায় এক টুকরো কাপড়

বীরভদ্র মন্দির বা লেপাক্ষী মন্দিরের কথা অনেকেই জানেন। অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর জেলার লেপাক্ষীতে অবস্থিত এই মন্দির। ষোড়শ শতকে ভারতীয় ভাস্কর্যের এক অপরূপ নিদর্শন হলো এই বীরভদ্র মন্দির বা লেপাক্ষী মন্দির।

বীরভদ্র মন্দির বা লেপাক্ষী মন্দিরের কথা অনেকেই জানেন। অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর জেলার লেপাক্ষীতে অবস্থিত এই মন্দির। ষোড়শ শতকে ভারতীয় ভাস্কর্যের এক অপরূপ নিদর্শন হলো এই বীরভদ্র মন্দির বা লেপাক্ষী মন্দির। স্কন্দ পুরাণ মতে, এই বীরভদ্র মন্দির হলো দেবাদিদেব মহাদেবের ১০৮ পীঠের অন্যতম পীঠস্থান। দেবাদিদেব মহাদেবের ভক্তরা এই মন্দিরে শিবের তাণ্ডব রূপ বীরভদ্রের পুজো করেন।

এই মন্দিরে রয়েছে একটি বীরভদ্রের মূর্তি। যেটির উচ্চতা ২৪ ফুট বাই ১৪ ফুট। একটি বড় পাথর কেটে বানানো শিবের বাহন নন্দীর মূর্তি এবং একটি পাথরের উপর খোদাই করে চিত্র আঁকা রয়েছে। পুরান মতে, ঋষি অগস্ত্য এই মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন। কুর্মা সৈল নামে একটি নিচু পাহাড়ের ওপর তৈরি এই মন্দির। তেলুগুতে কুর্মা সৈল-এর অর্থ কচ্ছপ। এই পাহাড়টি আকৃতি অনেকটা কচ্ছপের মত।

 

বীরভদ্র মন্দিরের দেওয়াল এবং থামে আঁকা রয়েছে শিবের ১৪টি অবতারের চিত্র। তিন তিনটি মন্ডপ রয়েছে এই মন্দিরে। একটি মুখ্য মণ্ডপ বা নাট্য বা রঙ্গ মণ্ডপ। দ্বিতীয়টি হল অর্থ মণ্ডপ বা গর্ভ গৃহ। তৃতীয় মন্ডপটির নাম কল্যাণ মণ্ডপ। তৃতীয় মণ্ডপটি এখনো পর্যন্ত অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। মন্দিরে প্রবেশ করলেই দেখতে পাওয়া যাবে ৭০টি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এই মন্দির। স্তম্ভের উপর চোখ পড়লেই দেখা যাবে যে, এর মধ্যে একটি স্তম্ভের মাটির সঙ্গে কোনও সংস্পর্শ নেই। খালি চোখে দেখলে মনে হবে সেটি ওপর থেকে ঝুলছে। এই স্তম্ভই মন্দিরের অন্যতম রহস্য।

এই ঝুলন্ত স্তম্ভের নাম “আকাশ স্তম্ভ”। স্তম্ভের নীচের দিকের খুব সামান্য অংশ মাটিকে স্পর্শ করে রয়েছে। যে কোনও পাতলা কাপড় বা রুমাল ওই স্তম্ভের নিচ দিয়ে এক পাশ থেকে অন্য পাশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব খুব সহজেই। স্তম্ভটির রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করেছিলেন এক ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হন। লেপাক্ষী মন্দিরের ঝুলন্ত স্তম্ভটি কী ভাবে তৈরি হয়েছিল, এখনো পর্যন্ত এই রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি কেউ। পর্যটকদের কাছে এই মন্দির বেশ আকর্ষণীয়। ঘুরতে এসে সকলেই এক বার ওই স্তম্ভের নীচ দিয়ে কাপড় এক পাশ থেকে অন্য পাশে নিয়ে গিয়ে এই ভাস্কর্যের রহস্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *