অজয় , দামোদরের বানে মাথায় হাত পূর্ব বর্ধমানের কৃষকদের
অজয়ের জলে বিপুল ক্ষতির মুখে রাজ্যের শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানের কৃষকেরা। ইতিমধ্যেই বিস্তীর্ণ জমির ধান এবং সব্জি জলের তলায় চলে গিয়েছে। পুরোপুরি জল সরলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পূর্ব বর্ধমানের কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এই সময়ে সাধারণত আউশ ধান কাটা হয়ে থাকে।জলমগ্ন এই পরিস্থিতি আক্ষরিক অর্থেই সেই পাকা ধানে মই দিয়েছে। জেলার কিছু জমিতে আমন ধানও চাষও হয়েছিল। ক্ষতি হয়েছে তাতেও। জেলা কৃষি দফতর বলছে, এই মরসুমে মোট ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৩৫ থেকে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। জেলায় ২ হাজার ২০০ মৌজার মধ্যে প্রায় ২৭৬টি মৌজায় জলমগ্ন পরিস্থিতির কারণে কম-বেশি ক্ষতি হয়েছে।
জেলা কৃষি দফতরের অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ”কয়েক দিন নাগাড়ে বৃষ্টি ছাড়াও জলাধার থেকে ছাড়া জলের জেরে ৮টি ব্লকে জল বেড়েছিল। প্রথমে দামোদর এবং অজয়, তার পরে ভাগীরথীর তীরবর্তী এলাকাতেও বেড়েছিল জল। এখনও কিছু এলাকায় জল জমে আছে। সেই সব এলাকার ফসলের বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।” অজয়, দামোদর এবং ভাগীরথী— তিন নদীর পাড়ে বিস্তীর্ণ জমিতে সব্জি চাষ হয়েছিল। প্লাবনে সেই চাষেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
প্লাবন পরিস্থিতির জেরে মাথায় হাত কৃষকদের। জল নামলেও কী ভাবে ক্ষতি সামলানো যাবে তা নিয়ে চিন্তিত দামোদর এবং অজয়ের তীরবর্তী কৃষকেরা। দামোদরের পাড়ে রায়নায় বাড়ি দেবু মালিকের। তাঁর বক্তব্য, ”এখন যা পরিস্থিতি তাতে সরকার ক্ষতিপূরণ না দিলে মুশকিল।” একই কথা বলছেন রায়নার কৃষক কেশব মালিকও। আউশগ্রামের সাঁতলার বাসিন্দা পেশায় কৃষিজীবী বিজয় দাস বলছেন, ”অজয়ের জলে ধান জমির পুরোটাই এখন ডুবে। পুরো ধান নষ্ট হয়ে গেলে খাব কী?’ তবে কৃষি দফতর জানিয়েছে, শস্যবিমা থাকলে কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।