বাঁকুড়ায় ফিরে যেতে চায়না হাতির দল , পছন্দ বর্ধমানই
মনের মতো খাবার মেলায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় থেকে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে দলমার হাতির দল। এমনটাই মনে করছেন বনদপ্তরের আধিকারিক ও হস্তি বিশেষজ্ঞরা। আটদিন আগে দলমার ৬১টি হাতির বিশাল দল পাত্রসায়ের জঙ্গল থেকে দামোদর পেরিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলায় চলে আসে।
বুধবার সন্ধে পর্যন্ত এই জেলাতেই রয়েছে তারা। তাদের পুনরায় বাঁকুড়া জেলায় ফেরত পাঠানোর সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন দফতর। কিন্তু তা সত্ত্বেও হাতির দলটিকে পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে সরানো যায় নি। এখন তারা পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের ভালকি প্রতাপপুরের জঙ্গলে রয়েছে।
বন দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, প্রতি রাতেই মশাল জ্বেলে হাতির দলটিকে বাঁকুড়া জেলার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রথমদিকে কিছুটা সাফল্য মিললেও পরবর্তী সময়ে ফের হাতির দলটি পিছু ঘুরে আগের জায়গায় ফিরে যাচ্ছে। বাঁকুড়া জেলায় ফেরত যাবার তেমন ইচ্ছে তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।
আধিকারিকরা বলছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় এখন প্রচুর পাকা ধান রয়েছে। অন্যান্য গাছ সবজি রয়েছে। সেসব খাবার খাচ্ছে হাতির দল। তাছাড়া এখানে নাগালের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জলও মিলছে। অন্যদিকে এই দলটিতে সাতটি শাবক রয়েছে। এই শাবকদের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ সতর্ক হাতির দলটি। তারা সব সময় শাবকদের ঘিরে রয়েছে।
বুধবার থেকে একটানা হেঁটেছে হাতির দলটি। শনিবার বিকেলের দিকে তাদের বসে পড়তে দেখা যায়। শাবকগুলি একটানা হাঁটার পর ক্লান্ত। পূর্ণাঙ্গ হাতিগুলি বুঝেছে, শাবকদের বিশ্রামের প্রয়োজন। তাই তারা আউশগ্রামের জঙ্গলেই এখন থাকতে চাইছে। তবুও তাদের সতর্কতার সঙ্গে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।
এরই মধ্যে বনদপ্তরের আধিকারিকদের চিন্তা বাড়িয়ে একাধিকবার হাতির দলটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আধিকারিকরা বলছেন, জঙ্গলে হাতিদের এটা একটা কৌশল। হুলা পার্টিকে বিভ্রান্ত করতেই বারে বারে দল ভাঙার ফন্দি নিচ্ছে হাতির দলটি। তবে তারা কাছাকাছি জায়গাতেই রয়েছে, এটা একটা স্বস্তির বিষয়।
হাতির দল আলাদা আলাদা হয়ে গেলে প্রতি দলের পিছনে আলাদা করে নজর দিতে হবে। তাছাড়া তাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বাড়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই হাতির দলটি যাতে দুই বা তার বেশি দলে বিভক্ত হয়ে বিচরণ করতে না পারে সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে।