লক্ষাধিক টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে পোষ্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে
পাশবুকে টাকা জমার সিলমোহর ও পোষ্টমাস্টারের সই রয়েছে। অথচ সেই টাকা জমাই হয়নি পোষ্ট অফিসে। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানে। দু’একজন নয়, এই ঘটনায় প্রতারিত হয়েছেন কয়েকশো আমানতকারী। লক্ষাধিক টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে পোষ্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে।আমানতকারীদের কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পোষ্ট মাস্টার ও পোষ্ট অফিসের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। টাকা ফেরতের দাবিতে আমানতকারীরা বিক্ষোভ দেখান, পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পোস্ট অফিসের এক কর্মীকে গ্রেফতার করলেও পলাতক পোস্ট মাস্টার। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার শিপতাই পোষ্ট অফিসে এই ঘটনা ঘটেছে।
আমানতকারীদের অভিযোগ,তাঁদের টাকা আত্মসাত্ করে গা ঢাকা দিয়েছে পোস্ট মাস্টার আদিত্য দাস ও পোষ্ট অফিসের অস্থায়ী কর্মী কৌশিক মাঝি। প্রতারিত আমানতকারীদের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পুলিশ শিবতাই সাব পোস্ট আফিসের অস্থায়ী কর্মী কৌশিক মাঝিকে গ্রেফতার করেছে। শিবতাই গ্রামেই তার বাড়ি। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। হুগলির খানপুর পোস্ট অফিসের অধীনে শিবতাই গ্রামের সাব পোস্ট অফিসটি। ওই সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টারের দায়িত্বে রয়েছেন শিবতাই গ্রামের বাসিন্দা আদিত্য দাস। তারই সহযোগী হিসাবে পোস্ট অফিসে অস্থায়ী পদে কাজ করতেন কৌশিক মাঝি। টাকা আত্মসাত্তের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পোস্ট মাস্টার গ্রেফতার না হওয়ায় শিবতাই পোস্ট অফিসের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আমানতকারীরা ।
আমানতকারীদের অভিযোগ, শিবতাই গ্রাম-সহ পার্শ্ববর্তী ৪-৫ টি গ্রামের মানুষ শিবতাই পোস্ট অফিসের আমানতকারী। সঞ্চয়ের টাকা তাঁরা সেখানেই জমা রাখেন। পূর্বে কোনও সমস্যা না হলেও ২০১৮ সালের পর থেকে অনৈতিক কাজ শুরু হয় পোস্ট অফিসে। অভিযোগ, টাকা পোস্ট অফিসে জমা দিলে পোস্ট মাস্টার পাশ বইয়ে পেনে লিখে শিল মেরে দিয়ে বলতেন টাকা জমা হয়ে গিয়েছে। টাকা জমা সংক্রান্ত কম্পিউটার বিল চাইলে পোস্ট মাস্টার আদিত্য দাস জানিয়ে দিতেন মেশিন খারাপ। কোনও অসুবিধা হবে না বলে জানিয়ে তাঁদের পাশ বই পোস্ট মাস্টার নিজের কাছেই রেখে দিতেন। পোস্ট মাস্টার তাঁদের গ্রামেরই বাসিন্দা, তাই তাঁর কথা তাঁরা সরল মনে বিশ্বাস করেছিলেন । দিন ৬-৭ আগে পোস্ট মাস্টার আদিত্য ও তাঁর সহযোগী কৌশিক পোস্ট অফিস বন্ধ করে দিয়ে গায়েব হয়ে যায়। তার পর থেকে পোস্ট অফিস বন্ধই রয়েছে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে আমানতকারীরা খানপুর পোস্ট অফিসে যান। সেখানকার আধিকারিকদের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিলে তাঁরা জানিয়ে দেন, দীর্ঘ দিন কোনও টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। ৫-৬ টি গ্রামের কয়েকশো আমানতকারীর টাকা আত্মসাত্ করে অস্থায়ী কর্মী কৌশিককে নিয়ে গা ঢাকা দেবে তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেন নি । প্রতারক পোস্ট মাস্টারের দৃষ্টান্তমূল শাস্তির দাবি করেছেন প্রতারিত আমানতকারীরা । পোষ্ট মাস্টারের হদিশ পেতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।