দূর্গাপূজা নিয়ে হাইকোর্টের নয়া নির্দেশিকা , দেখে নিন
দুর্গাপুজো নিয়ে নয়া নির্দেশিকা হাইকোর্টের। সিঁদুর-খেলা থেকে আরতি- সব উপাচারেই মিলল অনুমতি। তবে সব ক্ষেত্রেই একটি শর্ত। টিকার ডবল ডোজ় নেওয়া থাকলেই মণ্ডপে অনুমতি মিলবে অঞ্জলি দেওয়ার কিংবা দশমীতে সিঁদুর খেলার। দুর্গাপুজোর উপাচার মানার ক্ষেত্রে দর্শনার্থীদের ডবল ডোজ় বাধ্যতামূলক করল হাইকোর্টের বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায় ও অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।শুধু তাই নয়, উপাচারের সময়ে কারা মণ্ডপে থাকবেন, সেই নামের তালিকাও আগে থেকে উদ্যোক্তাদের তৈরি করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত বৃহস্পতিবার আরও একবার পুজো উদ্যোক্তাদের স্পষ্ট করে দেন, ‘কঠোরভাবে মানতে হবে করোনা বিধি।’ দুটি ডোজ় নেওয়া থাকলেও মাস্ক বাধ্যতামূলক বলে আদালত জানিয়ে দিয়েছে।
পুজো মণ্ডলগুলিতে এক সঙ্গে কত জন করে থাকতে পারবেন, সেই সংখ্যাটাও এদিন আদালত নির্দিষ্ট করে দেয়। হাইকোর্টের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, বড় মণ্ডলগুলিতে একসঙ্গে থাকতে পারবেন ৪৫-৬০ জন দর্শনার্থী। ছোটো মণ্ডপগুলিতে একসঙ্গে থাকবে পারবেন ১৫ জন। নিয়ম না মানলে পুজোর অনুমতিই বাতিল করে দেওয়া হবে বলে কঠোরভাবে জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
পুজো মণ্ডপে ‘নো এন্ট্রি’র বিষয়ে আরও একবার সতর্ক করল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন, পুজোর গাইডলাইন মামলায় এজিকে তলব করে আদালত। এজি-র সামনেই আদালত আরও একবার পুজোতে স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে কড়া বার্তা দেয়। পুজো মণ্ডপগুলি যাতে দর্শনার্থী শূন্য হয়, সে ব্যাপারে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় রাজ্যকে।
প্রসঙ্গত, পুজোর মানা হচ্ছে না বিধি নিষেধ, এই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এক আইনজীবী। তিনি বেশ কিছু বিষয় আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার ভিত্তিতে আদালত, এদিন এজিকে তলব করে। বেলা ১২.৫৫ মিনিটের মধ্যে এজিকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
রাজ্যের পক্ষ থেকে এজি আদালতে বেশ কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেন।
এজি আদালতে জানান,
১) সরকার সার্কুলার জারি করেছে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না।
২) ১৫ জনের বেশি প্যান্ডালে নয়। কোনও বাধা না দেওয়া হলেও ‘নো এন্ট্রি জোন’ রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশ মানতে হবে।
৩) এজি এদিন আদালতে স্পষ্ট করেন, গত বছরও সিঁদুর খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। তবে কতজন এক সঙ্গে মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন, তার সংখ্যা দেওয়া হয়েছে।
৪) ঢাকি শুধু প্যান্ডালেই থাকবেন।
তবে প্রথমে রাজ্যের সার্কুলার কয়েকটি ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশ অবমাননা করছে বলে মামলাকারী অভিযোগ করেন। সেক্ষেত্রে এজি আদালতে স্পষ্ট জানান, হাইকোর্টের নির্দেশের আগেই সার্কুলার দেওয়া হয়েছে। তবে হাইকোর্টের নির্দেশের পর আবার অতিরিক্ত সার্কুলার জারি করে কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে। এজি আদালতে জানান, বর্তমানে বাংলায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২ শতাংশের নীচে।
এজি আদালতে বলেন, “আমরা নতুন কিছু বলে কাউকে বিরক্ত করছি না। তবে নো এন্ট্রি থাকবে। ডাবল ভ্যাক্সিন থাকতে হবে পূজো উদ্যোগক্তাদের।” তবে সিঁদুর খেলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মামলাকারী আইনজীবী।
আদালতে তিনি সওয়াল করেন, “সিঁদুর খেলায় স্পর্শ থাকে। গঙ্গাসাগরে ই-স্নানের মতো ই- সিঁদুর খেলা হোক।” যদিও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায় ও অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট বলে দেন, “স্বাস্থ্য দফতর এই বিষয়গুলো দেখবে। নির্দেশ যে প্যান্ডালে মানা হবে না, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”