ধান চাষের তুলনায় আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে চাষীরা

গত বর্ষাকালে চারবার অতিবর্ষণ (Heavy Rain) ও জলাধারের জল ছাড়ার কারণে কৃষিতে (Cultivation) ক্ষতির (huge loss) মুখে পড়েছিল চাষিরা। এবার জাওয়াদ (Cyclone Jawad) বিপর্যয় পঞ্চম দফার ক্ষতির মুখে দাঁড় করালো চাষীদের। মেদিনীপুর জেলা জুড়ে শুধু ক্ষতির ছবি। জেলাতে ধানে তেমন ক্ষতি না হলেও আলুর ক্ষেত্রে বড় ক্ষতির মুখে কৃষকেরা।কৃষি দপ্তরের হিসেবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে এই মরসুমে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। যার মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি ধান কৃষকেরা বাড়িতে তুলে ফেলেছেন। অবশিষ্ট মাঠে থাকা ধানে এই জাওয়াদ বর্ষণে ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

কারণ বহু জায়গাতেই ধান বর্ষণের জমা জলে ভেসে রয়েছে। কোনভাবে সেখান থেকে থেকে ছেঁকে শুকিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন কৃষকরা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের জুয়ারহাটি এলাকার কৃষক লক্ষীরাম সরেন বলেন-” এলাকায় বেশিরভাগ কৃষকের ধান জমি এখন জলে ভাসছে। সেখান থেকে তুলে শুকিয়ে ধান বাঁচানোর চেষ্টা চলছে সকলের। কতখানি উদ্ধার হবে তার ঠিক নেই। ধান থেকে অংকুর হওয়ার ভয় বেশি।”

আলুর জমিতেও ব্যাপকভাবে জমেছে জল। শনিবার রবিবার দুই দিনের বর্ষণে আলুর জমিগুলো বেশিরভাগটাই ডুবে গিয়েছে। সোমবার সকাল থেকে আবহাওয়া খানিকটা পরিষ্কার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষকেরা মাঠ থেকে জল বের করার আপ্রান চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন।

পাথরা এলাকার কৃষক বাবলু কোটাল বলেন-” ধান ও আলু সবটাই জলের তলায়। চরম সমস্যায় পড়েছেন এখানকার কৃষকরা। দ্রুত জমি থেকে জল বের করার চেষ্টা চালাচ্ছি। সেই জল বেরিয়ে গেলে হয়তো কিছুটা রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।” তবে সেই সম্ভাবনা যে বিশেষ নেই, বুঝতে পারছেন এলাকার চাষীভাইয়েরা।

আবার অনেক কৃষক মনে করছেন আলুর জমি থেকে জল বের হলেও রক্ষে নেই। কারণ আবহাওয়া পরিষ্কার হয়ে রোদ হলেই মাটির ভেতরে স্যাঁতসেতে আলু বীজ পচে নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে এই বর্ষণ আলু চাষের চরম ক্ষতি করবে।

রামনগর এলাকার কৃষক মইনুদ্দিন বিশ্বাস বলেন-” আমরা যেভাবে চেষ্টা করি না কেন এই রোপন করা আলুবীজ আর বাঁচানো কখনোই সম্ভব হবে না। চাষিরা আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করবোই। কিন্তু সদ্য রোপন করা আলুর জমি যেভাবে ভিজেছে রোদ ওঠার সাথে সাথে আলু বীজ নষ্ট হবেই। এই নিয়ে পঞ্চম বার ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *