মৃত্যুর আগে সমাধি
জন্মিলে মরিতে হইবে, এই কথাটির সারমর্ম সাধক ভবা পাগলা তার জীবন দশা তেই বুঝেছিলেন, তাই তিনি ঠাকুরের মন্দির তৈরি সঙ্গে সঙ্গে,ঠিক মন্দিরের উল্টোদিকে একটি সমাধি মন্দির তৈরি করেছিলেন
জন্মিলে মরিতে হইবে, এই কথাটির সারমর্ম সাধক ভবা পাগলা তার জীবন দশা তেই বুঝেছিলেন, তাই তিনি ঠাকুরের মন্দির তৈরি সঙ্গে সঙ্গে,ঠিক মন্দিরের উল্টোদিকে একটি সমাধি মন্দির তৈরি করেছিলেন যেই সমাধিমন্দিরে তার বংশধররা ভবাপাগলার মৃত্যুর পর ভবা পাগলার কথা মত ভবাপাগলার নিজের তৈরি সমাধিমন্দিরে সাধক ভবাপাগলা কে সমাধিস্থ করা হয় l ভবা পাগলার আসল নাম ভবেন্দ্র মোহন সাহা, জন্ম আনুমানিক ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে, সাধক ভবা পাগলা বাংলাদেশে বসবাস করতেন, স্বাধীনতার পর তিনি ভারতে চলে আসেন, তিনি পূর্ব বর্ধমানের কালনাতে বসবাস শুরু করেন l
সাধক ভবা পাগলার পুঁথিগত বিদ্যা সেভাবে ছিল না, শোনা যায় তিনি অষ্টম শ্রেণির চৌকাট পেরোননি l কিন্তু তার জ্ঞান ছিল অসীম l তিনি মুখে মুখে গান করে সঙ্গে সঙ্গে সুর বেঁধে দিতেন, তথ্য বলছে ভবা পাগলার গানের সংখ্যা 86 হাজারl তিনি খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারতেন, ভবাপাগলা ছুঁচ সুতোর কাজ জানতো অতীব সুন্দরl তিনি ছুঁচ সুতো দিয়ে বিভিন্ন রকমের নকশার মাধ্যমে কাপড়ের উপর ফুটিয়ে তুলতে কখনো পশু পাখির ছবি কখনো মা কালীর ছবি বা কখনো কোন পরিবেশের ছবি, আবার তিনি খুব ভালো ছবি আঁকতে পারতেন, বিভিন্ন রকম রং দিয়ে নানা রকম চিত্র অঙ্কন করে তিনি তার মনের ভিতরের আবেগ কে প্রকাশ করতেন, তিনি বাদ্যযন্ত্র বাজানতে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন l
হারমোনিয়াম বেহালা বাঁশি ঢোল বিভিন্ন রকম বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তিনি গান করতেন, অসীম গুণে পারদর্শী ছিলেন ভবা পাগলা, তার অগণিত শিষ্য, অগণিত ভক্ত দেশ-বিদেশ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে l ভবা পাগলা দেখতে ছিলেন চিকন পাতলা গড়নের মানুষ, গায়ের রঙ ছিল উজ্জল শ্যামলাl মাথায় এক গোছা চুল, থুতনিতে ছিল এক গোছা দাড়ি, পোশাক-আশাক বলতেছিল লাল বস্ত্র তিনি সবসময় পরিধানকরতো ভবা পাগলার জীবনের স্মৃতি বিজড়িত মন্দির এখনো সযত্নে রেখেছেন তার বংশধরেরা, তার হাতের আঁকা ছবি, নিজের হাতের সেলাই ভবা পাগলার ছোটবেলার খেলনা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র তার ব্যবহারের পোশাক এখনো শোভা পাচ্ছে তার হাতের তৈরি মন্দিরের ভিতরে l যা দেখতে অগণিত মানুষ ভিড় করে মা বগলা মন্দির l সাধক ভবা পাগলার শয়নকক্ষ টি এখনো রয়েছে সযত্নেl সাধক ভবাপাগলা ছিলো দয়ালু মনের মানুষ,মানুষের দুঃখ কষ্ট অভাব অনটনের কথা জানতে পারলে, তিনি তার যথাসাধ্য উজাত করেদিতেন l