বর্ধমানে জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে ধানের শীষ , নাজেহাল চাষীরা
কথায় আছে আশায় বাঁচে চাষা। তবে সেই আশায় এবার জল ঢেলে দিয়েছে শোষক পোকা। এই পোকার আক্রমণে নাজেহাল শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানের কৃষকরা। করোনার জেরে অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো মন্দার ছাপ পড়েছে কৃষি ক্ষেত্রেও।
ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করলেও, শোষক পোকার আক্রমণে নাজেহাল বাংলার একটা বড় অংশের কৃষকেরা।জেলায় ধান কাটার মরশুম শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এই অবস্থায় শুকিয়ে যাচ্ছে ধানের শিস। শোষক পোকার আক্রমণে কার্যত দিশেহারা পূর্ব বর্ধমানের চাষিরা। জেলার রায়না থেকে খণ্ডঘোষ, গলসি থেকে আউশগ্রাম সর্বত্রই একই চিত্র।
বৃষ্টির জেরে জমিতে জল জমায় ধান কাটা পিছিয়ে গিয়েছে। তার উপর পোকার আক্রমণ নতুন করে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চাষিদের। চাষিদের একাংশের দাবি, বাজার থেকে নামীদামি কীটনাশক এনে প্রয়োগ করেও কোনও সুরাহা মিলছে না।আমন ধান চাষ করতে প্রতি বিঘেতে খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। আর খাস ধান চাষে খরচ হয়েছে একটু কম।
কিন্তু পোকার আক্রমণে লাভ তো দূরের কথা আসল খরচই উঠবে না। ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। চাষীরা জানিয়েছেন, সাধারণত আমন ধানের জমিতে শোষক পোকার আক্রমণ হয়েই থাকে। তবে ধান পাকার পর, পোকার আক্রমণের ঘটনা আগে ঘটেনি।
ধান পাকার আগেই শুকিয়ে যাচ্ছে শিষ। স্থানীয় চাষী মানিক মালিক জানান, তিনি পাঁচ বিঘা জমি চাষ করেছিলেন তাতে শোষক পোকার আক্রমণের ফলে, তিনি আর ধান কাটতে পারবেন না। আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাঁর দাবি, আগে কীটনাশক কোম্পানির যে ওষুধ বাজারে বিক্রি হতো, সেই সব কোম্পানির কীটনাশক এখন আর পাওয়া যায় না ।
ফলে বর্তমানে যে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে পোকা মরছে নাব্যপক ক্ষতি হচ্ছে। উল্লেখ্য, স্বর্ণ প্রজাতির ধান বিঘে প্রতি ১০ থেকে ১২ বস্তা হয়ে থাকে প্রতি বছর। এবছর বিঘে প্রতি পাঁচ বস্তা করেও ধান পাওয়া যাবে না হয়তো। খাস ধানের ক্ষেত্রেও পরিমাণটা আরও কম। পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে তাড়াতাড়ি ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছেন জেলার কৃষি আধিকারিকরা।