এবার এই খাবারও বাদ পড়ল মিড ডে মিল থেকে , দেখে নিন
এ যেন ঢেউয়ের মতোই! তবে এ ঢেউ সংক্রমণের নয়, মিড ডে মিলের বরাদ্দের। কিন্তু সংক্রমণের মতোই এই ঢেউয়েও শীর্ষ বিন্দু ছুঁয়ে ফের রেখচিত্র নামতে শুরু করেছে।
গত জানুয়ারি মাসে পড়ুয়াদের মিড ডে মিল দেওয়া শুরু হয়েছিল চাল, আলু, ছোলা এবং সাবান দিয়ে। মে মাসে ওই চারটি সামগ্রী বাদেও চিনি, সয়াবিন এবং ছোলা-সহ মোট সাতটি জিনিস দেওয়া হয়।কিন্তু জুন মাস থেকেই বরাদ্দ তালিকায় সামগ্রীর সংখ্যা ছয়ে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরে ফের এক দফা কমে মিড ডে মিলে পাঁচটি জিনিস দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কমেছে সামগ্রীর পরিমাণও।
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক মহলের একাংশের প্রশ্ন, স্কুলে মিড মে মিলের ক্ষেত্রে রান্নার খরচ বাদ দিয়ে পড়ুয়াপিছু যে টাকা বরাদ্দ হয়, এ ক্ষেত্রে তার থেকে অনেক কম বরাদ্দ হচ্ছে। রান্নার খরচ বাঁচলেও কেন মাথাপিছু টাকা কমছে?
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হন্ডা জানান, স্কুল খোলা থাকলে এক জন প্রাথমিকের পড়ুয়ার দৈনিক মিড ডে মিলের বরাদ্দ ৪ টাকা ৯৭ পয়সা। অর্থাত্ ২০ দিন স্কুল হলে মাসে মাথাপিছু ৯৯ টাকা ৪০ পয়সা খরচ। উচ্চ প্রাথমিকে পড়ুয়াপিছু দৈনিক মিড ডে মিলের বরাদ্দ ৭ টাকা ৪৫ পয়সা।
২০ দিন স্কুল হলে মাসিক বরাদ্দ দাঁড়ায় ১৪৯ টাকা। সেখানে সেপ্টেম্বর মাসে মিড ডে মিলে পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ হচ্ছে আলু (৩২ টাকা)+ মুসুর ডাল (২৫ টাকা) + চিনি (১১ টাকা) সাবান (১০ টাকা)। মোট ৭৮ টাকা। আনন্দবাবু বলেন, ‘অতিমারি পরিস্থিতিতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টির প্রয়োজন বেশি। আমরা অনেক দিন ধরে ডিম দেওয়ার দাবি করেছি। এও বলেছি যে সয়াবিন বন্ধ করলে চলবে না।’
লাভপুর সত্যনারায়ণ শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষিকা মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘স্কুলে সপ্তাহে দু-তিন দিন ডিম দেওয়া হত। এখন তো সে সব কিছু পায় না। গ্রামের প্রান্তিক পরিবারের বয়ঃসন্ধিকালের মেয়েরা খুবই পুষ্টির অভাবে ভুগছে।’
কলকাতার মানিকতলা এলাকার এক পড়ুয়ার অভিভাবক বলেন, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়ির খাবার খরচ বেড়ে গিয়েছে। ছেলে স্কুলে থাকলে একবেলা খাবার স্কুলেই খেত। এখন মাসে-মাসে মিড ডে মিলে যে চাল, আলু, ডাল পাই তা দিন কয়েকের মধ্যেই ফুরিয়ে যায়।’ ছোলা এবং সয়াবিন বন্ধ হওয়ায় অখুশি বহু অভিভাবকও।
এপ্রিল-মে মাসে মিড ডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধি নিয়ে শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘গত আর্থিক বছরের শেষে দেখা গিয়েছিল, বরাদ্দ অর্থের কিছুটা বেঁচে গিয়েছে। সেই উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়ে বেশি পরিমাণে সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। এই আর্থিক বছরের শেষে অর্থ উদ্বৃত্ত হলে ফের মিড ডে মিলের সামগ্রী বেড়ে যেতে পারে।’