ড্যানিশ অধিনায়ক কায়ের ওইসময় তত্পরতা না দেখালে কী হতো বলা মুশকিল ছিল
ইউরো 2020 ফুটবল টুর্নামেন্টে ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে এ ম্যাচে ডেনিশ তারকা ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন মাঠের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন।কোপেনহেগেনের এই ম্যাচে একটি থ্রো-ইন রিসিভ করার সময় হঠাত্ করেই এরিকসেন উপুড় হয়ে পড়ে যান।প্রায় সাথে সাথেই খেলা বন্ধ করে রেফারি জরুরি চিকিত্সা দলকে মাঠে ডাকেন।মেডিকেল স্টাফরা কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তার জ্ঞান ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন।এর মধ্যে ডেনমার্ক দলের কয়েকজন খেলোয়াড়কে কাঁদতে এবং প্রার্থনা করতে দেখা যায়।
মাঠে মুখ থুবড়ে পড়ে আছেন এরিকসেন।মাঠের দর্শকরাও এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় হতবাক এবং উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।এরিকসেনের স্ত্রীও সে সময় স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন। তাকেও মাঠে ডাকা হয়।ডেসমার্কের ক্যাপ্টেন সাইমন কাইয়ার এবং গোলকিপার ক্যাসপার শ্মাইকেলকে দেখা যায় তাকে সান্তনা দিতে।ম্যাচটি বাতিল হলো কিনা তা ইউয়েফা এখনও নিশ্চিত করেনি।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের মতে ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন আর ফুটবল পারবেন না। হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলে ইটালিতে ইন্টার মিলানের হয়েও আর খেলার সম্ভবনা নেই তাঁর। এর আগে কোনও দিন হৃদরোগের কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি তাঁর।
শনিবার রাতে ফিনল্যান্ড বনাম ডেনমার্কের ম্যাচে হঠাত্ মাঠের মধ্যে পড়ে যান এরিকসেন। মাঠের মধ্যে ১০ মিনিট চিকিত্সা করার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। জ্ঞান ফিরলেও কী কারণে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। মনে করা হচ্ছে হৃদরোগের কোনও সমস্যার কারণে এমন ঘটেছিল। মাঠের মধ্যেই তাঁকে সিপিআর দিয়েছিলেন ডেনমার্কের অধিনায়ক সাইমন কায়ের।
মাঠের মধ্যে ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের জ্ঞান হারানো এবং চিকিত্সার জন্য বেরিয়ে যাওয়ার পর মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল গোটা ডেনমার্ক দল। কিছুক্ষণ ম্যাচ স্থগিত রাখা হয়। তবে ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফের খেলতে নামার জন্য তাঁদের আবেদন করেন স্বয়ং এরিকসেন। ভিডিয়ো কলে এরিকসেনের সেই আবেদনের পরেই মাঠে নামে ডেনমার্ক।
শনিবার রাতে গোটা বিশ্বের ফুটবল সমর্থকদের মনে তৈরি হয় আশঙ্কা। ইউরো কাপে গ্রুপ বি-র ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ডেনমার্ক এবং ফিনল্যান্ড। ৪২ মিনিটের মাথায় হঠাত্ মাঠের মধ্যে পড়ে যান এরিকসেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সিপিআর দেন ডেনমার্ক অধিনায়ক সাইমন কায়ের। এরপর চিকিত্সকরা এলে তাঁদের ঘিরে দেওয়াল তৈরি করেন ফুটবলাররা। সেই সময় তাঁদের কান্না বুঝিয়ে দিচ্ছিল সতীর্থর এমন অবস্থা মানসিক ভাবে কতটা ভেঙে দিয়েছে তাঁদের।
এরিকসেনের জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য অনেকেরই কৃতিত্ব প্রাপ্য। তিনি যখন মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন রেফারি অ্যান্টনি টেলর তত্ক্ষণাত্ খেলা থামিয়ে দিয়েছেন। এরপর চিকিত্সক দল অত্যন্ত তত্পরতার সঙ্গে প্রাথমিক চিকিত্সা শুরু করে দেন। ডেনমার্কের ফুটবলাররা এরিকসেনের চারপাশে বলয় তৈরি করেন, যে দৃশ্য ফুটবল ইতিহাসে জায়গা করে নেবে।
যদিও ড্যানিশ অধিনায়ক কায়ের ওইসময় তত্পরতা না দেখালে কী হতো বলা মুশকিল ছিল। তিনি সবার আগে ছুটে যান এরিকসেনের কাছে। তাঁর দলের সবথেকে নির্ভরযোগ্য ফুটবলারের জিভ যাতে গলায় আটকে না যায়, সেটা নিশ্চিত করেন। তারপর এরিকসেনের বুকে চাপ দিয়ে কৃত্রিম ভাবে তাঁর শ্বাস প্রক্রিয়া চালু রাখেন। চিকিত্সকরা মাঠে আসার আগেই কায়ের সতীর্থের জন্য সিপিআর চালু করে দেন