মা কল্যানেশ্বরী
বাঙালিদের কাছে কাছেপিঠে ঘোরার জায়গা মানেই মাইথন। আর যারা মাইথন এসেছেন তারা কল্যানেশ্বরী মন্দিরে যাননি এমনটা কিন্তু নয়
বাঙালিদের কাছে কাছেপিঠে ঘোরার জায়গা মানেই মাইথন। আর যারা মাইথন এসেছেন তারা কল্যানেশ্বরী মন্দিরে যাননি এমনটা কিন্তু নয়।রাজ্যবাসীর কাছে কল্যানেশ্বরী প্রাচীন দেবীপিঠ বলেও চিহ্নিত। সিনেমা হয়েছে কল্যানেশ্বরীকে নিয়ে। রয়েছে ঐতিহাসিক এবং অলৌকিক গল্পগাঁথা।বর্তমান যে কল্যানেশ্বরী মন্দির রয়েছে তার থেকে বেশ কিছুটা দুরেই প্রাচীন মন্দিরটি। ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে শবনপুর এলাকায় কল্যানেশ্বরীর প্রাচীন মন্দির। কল্যানেশ্বরীর প্রধান সেবাইত দিলীপ দেওঘরিয়া জানান প্রাচীন মন্দিরেই দেবী অধিষ্ঠিতা আছেন। এখানেই রাজা কল্যানীপ্রসাদ মা কল্যানেশ্বরীকে রেখেছিলেন। আর নিয়ে যেতে পারেননি।
কিন্তু কি সেই গল্প?জানা গেছে রাজা বল্লাল সেনের পালিতা কন্যার নাম ছিল লক্ষ্মী। লক্ষ্মীর সাথে বিয়ের ঠিক হয় পুরুলিয়ার কাশীপুরের রাজা কল্যানীপ্রসাদের। বিয়ের যৌতুকে শ্যামারুপার মুর্তি তুলে দেওয়া হয় লক্ষ্মীকে। কল্যানীপ্রসাদ স্ত্রী লক্ষ্মীকে বিয়ে করে ফিরছিলেন সঙ্গে ছিল দেবী শ্যামারুপা। কুলটি স্বপ্নপুর গ্রামের কাছে জঙ্গলে দিকভ্রষ্ট হন তাঁরা। স্বপ্নপুরের বর্তমান নাম শবনপুর। জঙ্গলেই শ্যামারুপাকে নামিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু পরের দিন সকালে শতচেষ্টাতেও দেবীকে আর তুলতে পারেননি। সেই শবনপুরেই তৈরি হয় শ্যামারুপার মন্দির। কাশীপুরের রাজা কল্যানীপ্রসাদের নামে যা পরবর্তী কালে কল্যানেশ্বরী হয়ে যায়। এই গল্পের পাশাপাশি আরেকটি অলৌকিক গল্প আছে, বর্তমান যে মন্দির সেখানে তখন জঙ্গল ছিল। ছোট নদী বয়ে যেত। সেখানেই এক শাঁখারির কাছে শাখা পড়েন এক বধু।
কিন্তু তিনি টাকা নিতে বলেন সেই কল্যানেশ্বরী মন্দিরের সেবাইত দেবনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। শাঁখারি ওই যুবতীকে শাঁখা পরিয়ে চলে যান শবনপুর গ্রামে। সেখানে দেবনাথ বাবুর কাছে গিয়ে শোনেন তিনি নিঃসন্তান। এরপরে দেবনাথবাবু সেই শাঁখারিকে নিয়ে ফের সেই জঙ্গলে নদীর ঘাটে যান। গিয়ে দেখেন সেই যুবতী আর নেই। পাথরে পায়ের ছাপ। পরে এখানেই নতুন মন্দির তৈরি হয়। আজও নতুন মন্দিরের পাশে রয়েছে চালনাদহ ঘাটে মায়ের সেই পায়ের ছাপ। কালীপুজোর রাতে প্রচুর ভক্তকুল আসে। এই চালনাদহ ঘাটে মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালায় তারা। সারারাত চলে মায়ের পুজো।