মহামারী-দুর্যোগ ও জ্বালানির কোপে ট্রলার মালিকরা, কাজ হারানোর আশঙ্কায় একাধিক মৎস্যজীবী
আশা ছিল, পরিস্থিতি বদলাবেই। মোটেই হবে না গতবছরের মতো । কিন্তু সেই আশাটুকুও ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে প্রলয়ঙ্করী ইয়াসের ঝাপটায়, ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে। সঙ্কটে- বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মৎস্যজীবী। জুনের মাঝমাঝি শুরু হয় সমুদ্রে ইলিশ ধরার মরশুম। আর এই সমুদ্রযাত্রার জন্য মৎস্যজীবীদের যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে হয় । নতুন ট্রলার তৈরি, পুরনো ট্রলার মেরামত, মাছ ধরার জাল সারাই, নতুন জাল বাঁধাই সহ আনুসাঙ্গিক যাবতীয় প্রস্তুতি সবটাই সেরে ফেলতে হয় এই সময় । শঙ্করপুর, শৌলা, পেটুয়া সহ সমুদ্র পার্শ্ববর্তী এলাকা গেলে নজরে আসত মৎস্যজীবীদের চরম ব্যস্ততার দৃশ্য। কিন্তু বিগত আর পাঁচটা জুন মাসের মতো নয় এই বছরটি। গমগম করা এই পাড়াগুলোতে কেমন যেন বিরাজ করেছে নীরবতা।
প্রস্তুতি ছাড়াই তীরে বাঁধা পড়ে রয়েছে বহু লঞ্চ-ট্রলার। সামুদ্রিক এলাকায় ছোট-বড় মিলে সরকার অনুমোদিত লঞ্চ-ট্রলারের সংখ্যা প্রায় কয়েক হাজার। এবার যার 40 শতাংশ লঞ্চ-ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই বলে জানিয়েছেন ট্রলার মালিক রা। একদিকে মহামারী সঙ্কটের মধ্যে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গতবছর ব্যবসার চরম ক্ষতি হয়েছিল। মহামারীর সঙ্গে জ্বালানি যন্ত্রণাও রয়েছে, আবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর ফলে বহু লঞ্চ-ট্রলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে এবার।
একবার ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে আগে যে পরিমাণ তেলের খরচ হতো এবছর তেলের দাম বাড়ার ফলে অনেক বেশি পরিমাণ টাকা লাগছে , যার ফলে তেলের টাকার বেশি পরিমাণ মাছ ধরতে পারলে তবেই লাভের মুখ দেখেন ট্রলার মালিকরা। তবে এইভাবে জ্বালানির দাম বাড়তে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই বন্ধ করতে হবে এই ব্যবসা এমনটাই জানান দীঘা ফিশারমেন এন্ড ফিশ ট্রেডার্স এসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য প্রভাত চন্দ্র হাজরা । দীঘা ফিশারমেন এন্ড ফিশ ট্রেডার্স এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সদস্য তথা ট্রলার মালিক রাধাকৃষ্ণ মান্না জানান ইয়াসের ক্ষতিগ্রস্ত ট্রলার সারানোর পর শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে যদি লাভ না করা যায় তাহলে ট্রলার চালানো অসম্ভব, সংবাদমাধ্যমের মধ্যে দিয়ে যদি তেলের দাম কমানোর বার্তা সরকার কাছে পৌঁছায় তাহলে খুবই উপকৃত হবে এমনটাই জানান তিনি। তবে এইভাবে বেশ কিছুদিন চললে হাজার হাজার মৎস্যজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়বে এমনটাই আশা করছেন তারা।