চিনের জন্যও দরজা খুলল মোদি সরকার!

চিন থেকে কোভিড সামগ্রী আমদানির মেয়াদ ফুরিয়েছিল মার্চেই। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জেরে জারি করা হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভেবে ফের তা বাড়িয়ে দিয়েছে দিল্লি। শুধু তাই নয়, কোভিডের চিকিত্‍সা সামগ্রী, মূলত ভ্যাকসিনের জোগান বাড়াতে এবার গ্লোবাল টেন্ডার ডাকার কথাও ভাবছে ভারত। রাজ্যে রাজ্যে ভ্যাকসিনের জোগান পর্যাপ্ত না হওয়ায় স্বতন্ত্র উদ্যোগে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকার সিদ্ধান্ত গতকালই জানিয়েছিল তেলেঙ্গানা সরকার। এমনকি একইরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল দিল্লিতেও। বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তারপরেই খানিক নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র সরকার। সূত্রের খবর গ্লোবাল টেন্ডার ডাকার জন্য উদ্যোগী হয়েছে দিল্লি। গত বছরের এপ্রিল থেকেই চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। বিশ্ব জুড়ে অতিমারী পরিস্থিতির উদ্বেগের মাঝেই লাদাখ সীমান্তে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে চিনা সেনাবাহিনী গোলমাল পাকায়। আবার এখন কোভিডের হাত ধরেই কি ভারত-চিন সম্পর্কের বরফ গলবে? তৈরি হয়েছে সেই সম্ভাবনা। এমনিতেই কোভিড বিপর্যয়ে বিভিন্ন দেশের কাছে হাত পাততে হয়েছে দিল্লিকে। ১৬ বছর আগের ত্রাণ না নেওয়ার সিদ্ধান্তও বদল করতে হয়েছে। আমেরিকা, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স প্রভৃতি বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে সাহায্য। এমনকি পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশও। 

দেশে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাকসিন এই দুই টিকার বন্টন চলছে। কিন্তু অভিযোগ, দুটি মাত্র টিকার জোগান পর্যাপ্ত নয় একেবারেই। এভাবে চললে দেশের সকলকে টিকা দিতে দিতে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে। আর তাতে আরও শক্তিশালী আর ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠবে করোনা।সীমান্ত সংঘাত ঘিরে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে এসে দাঁড়িয়েছিল। গত বছর লাদাখে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকেই সংঘাত বাড়তে থাকে। চিনের সঙ্গে সমস্ত ‘দেওয়া-নেওয়ার’ সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছিল ভারত। কিন্তু পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, চিনের কাছ থেকেও সাহায্য নেওয়ায় আর আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে দিল্লি।

গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠান। তাতে তিনি লেখেন, ‘দেশের করোনার কঠিন পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের আকাল চলছে। বাংলার ১০ কোটি ও দেশের ১৪০ কোটি মানুষের জন্য খুব তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন প্রয়োজন। কিন্তু সেই তুলনায় দেশে ভ্যাকসিন নেই বললেই চলে। বিদেশে অনেক সংস্থা ভ্যাকসিন উত্‍পন্ন করছে। যদি সম্ভব হয়, তাহলে বিদেশের প্রসিদ্ধ সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমি অনুরোধ করছি, দেশের কথা ভেবে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে ভ্যাকসিন আনা হোক।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *