এবার মুর্শিদাবাদে দুয়ারে শিক্ষক

কোভিড মহামারি পরিস্থিতির জেরে প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পর, চারটি শ্রেণির জন্য স্কুল খুলেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে। কিন্ত শুরু থেকেই জেলার বেশ কিছু স্কুলে উপস্থিতির হার খুব কম, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসন।স্কুল খোলার প্রায় পনেরো দিন পরও পড়ুয়াদের গরহাজিরা নিয়ে চিন্তা কাটেনি শিক্ষকদেরও। সেই তালিকায় রয়েছে মুর্শিদাবাদের সাহাজাদপুর সারবাগান হাইস্কুল, নামু কান্দি হাইস্কুল, নবগ্রাম কেবিসিএস হাইস্কুল, জীবন্তি উদয়চাঁদ হাইস্কুল সহ একাধিক স্কুল।

তাই, এবার স্কুলছুটদের স্কুলমুখি করতে দুয়ারে নামলেন শিক্ষকরা।বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র ও ছাত্রীদের অসুবিধার কথা শুনে, স্কুলে আসার জন্য আবেদন করা হয় অভিভাবকদের কাছে, শিক্ষকদের পক্ষথেকে। সাহাজাদপুর সারবাগানের প্রধান শিক্ষক আরসাদুর রহমান বলেন ” মাধ্যমিক অর্থাত্‍ দশম শ্রেণির মোট শিক্ষার্থী ৪৬৫ জন, কিন্তু গড়ে উপস্থিত হচ্ছে ১৯২ জন। যদিও উচ্চমাধ্যমিকের পড়ুয়াদের উপস্থিতি বেশ ভালো”। কিন্তু নতুন রুটিনএবং দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকাকালীন পড়ুয়াদের উপস্থিতির সংখ্যা খুবই শোচনীয়।

তাছাড়া গত সপ্তাহ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের দু’ভাগে ভাগ করে দেওয়া হলো l সোম বুধ ও শুক্রবার আসবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছাত্রীরা এবং মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার আসবে নবম ও একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরা l ফলস্বরূপ হাজিরা আরো অর্ধেক হয়ে গেল। তাই স্কুলছুটদের ফেরাতে শিক্ষকেরা হাজির হলেন শিক্ষার্থীদের দুয়ারে দুয়ারে। সেই মতো সাহাজাদপুর সারবাগান হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আরসাদুর রহমান সহ দশজন শিক্ষক শিক্ষিকা এবং সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে, গ্রামের উদ্দেশ্যে পড়ুয়াদের দুয়ারে পৌঁছালেন শিক্ষকেরা।

গ্রামে ঘুরতে ও ছাত্র ছাত্রীদের বাড়ি চিনিয়ে দিতে সাহায্য করলো কিছু বর্তমান ও কিছু প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রী। শিক্ষকদের আগ্রহ দেখে অভিভাবকরা খুব আপ্লুত হন। শিক্ষকরাও তাদের ব্যবহার ও আপ্যায়নে খুব খুশি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এক অভিভাবক জসিমউদ্দিন শেখ বলেন, “আমার পরিবারে দুই সন্তান স্কুলে পড়লেও স্কুল বন্ধ থাকার ফলে তারা আর নতুন করে স্কুলে যেতে চাইছে না।

আজকে মাষ্টার মশাই এসেছেন, বোঝালেন , আমি আমার সন্তান কে স্কুলে পাঠাবো।”
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “স্কুল ছুট আটকাতে একটা তালিকা তৈরি করা হচ্ছে । যারা গরহাজির থাকছে, তাদের তালিকা তৈরি করে তাদের বাড়িতে শিক্ষকরা যাচ্ছেন এবং কথা বলে আসছেন। পাশাপাশি স্কুলে আসার জন্য সচেতনতার বার্তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেওয়াহচ্ছে। আমরা স্বচেষ্ট আছি পড়ুয়ারা যেন আবার স্কুলমুখি হয়সেই জন্য।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *