নদী বক্ষ খুঁড়ে চড়ে পানীয় জলের জোগাড়

বছরভর শুকিয়ে যাওয়া নদী বক্ষ খুঁড়ে চলে পানীয় জলের জোগাড়, কল থাকলেও নেই জল, বাঁকুড়া জেলার প্রান্তিকে লুকিয়ে আছে এমনই এক আজব গ্রাম

এই গ্রামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে জেলার নাম।শাল, ইউক্যালিপটাসের জংগল পেরিয়ে গেলেই দেখা মিলবে এই প্রান্তিক গ্রামের। আমরা কথা বলছি বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ব্লকের অন্তর্গত ছান্দার গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁকুড়াডাঙা গ্রামের। এই গ্রামে সারিবদ্ধ ভাবে এক দল সরল সাধাসিধে গ্রাম্য মানুষের বসবাস গ্রামের সব কিছু আপাতত ঠিক থাকলেও পানীয় জলের সংকট যেন গ্রামবাসীদের কাছে বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামের মধ্যে সরকারী জলের লাইনের সংযোগ স্থাপন হলেও তাতে জল আসেনা, বছরভর জলকষ্টের যন্ত্রনার সম্মুখীন হতে হয় গ্রামবাসীদের।

 

এই সমস্যা কোনো নতুন নয় বছরের পর বছর একই যন্ত্রনা ভোগ করে আসতে হয় তাদের তবু কথায় আছে না ‘আশায় বাঁচে চাষা’ জল একদিন আসবে তাদের সমস্যা দূর হবে সেই আশায় যেন বুক বাঁধছে পুরো গ্রাম।এই গ্রামের একপ্রান্ত দিয়ে বয়ে গেছে শুকিয়ে যাওয়া শালী নদী, সেই নদীই যেন গ্রামের লাইফলাইন। জল যেখানে মানুষের জীবনে একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ তাই বাধ্য হয়ে পানীয় জল জোগাড় করতে হাড়ি,কলসি নিয়ে এই গ্রামের পুরুষ মহিলা সকলে বেরিয়ে পড়ে নদী বক্ষের উদ্দেশ্যে চলে নদী বক্ষ খুঁড়ে দুফোঁটা জলের সন্ধান। নদী খুঁড়ে যে টুকু জল মেলে তা সারাদিনের জন্য যথেষ্ট নয় বলেই জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা, তারা জানাচ্ছেন গ্রামে কোনো অতিথি এলে অন্নের জোগান দিতে পারলেও তারা পানীয় জলের জোগান দিতে পারবে না। তাদের এই সমস্যার কথা নিয়ে তারা একাধিক বার প্রশাসন থেকে শুরু দলীয় নেতৃত্ব সবার দরজার সম্মুখীন হলেও মেলেনি কোনো সুরাহা।

 

 

লতিকা তুংগ নামে এক গ্রামবাসী জানান, আমরা ছোটো থেকেই এই সমস্যাকে দেখে আসছি, কিছুদিন পূর্বে সরকারী দপ্তর থেকে এসে আমাদের বৈধ নথি সংগ্রহ করে নিয়ে গেল বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ স্থাপন করার জন্য কিন্তু কোথায় কি, এই প্রবল উত্তাপে আমাদের কষ্ট ভোগ করে নদী খুঁড়ে জলের যোগান করতে হচ্ছে। শংকর ভঞ্জ নামে আরেক গ্রামবাসী জানান, আমাদের না আছে সাব-মারসেল না আছে কিছু আমাদের মাটির বাড়িতে যদি আগুন লাগে দাড়িয়ে দাড়িয়ে জ্বলতে দেখতে হবে জলের সমস্যা এমনই৷ বাঁকুড়াডাঙা বাসীর এই সমস্যার কথা নিয়ে বড়জোড়া বিধানসভার বিধায়ক অলোক মুখার্জির কে জানালে তিনি জানান বাঁকুড়াডাঙা গ্রামের জলের সমস্যার কথা তিনি শুনেছেন গত বাম আমলে ঐ জায়গায় পানীয় জলের কল অবদি ছিল না এই সরকারের আমলে তা হয়েছে,তিনি এই কথা জেলাশাষককে জানিয়েছে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে দেখছেন,  ঐ গ্রামেও শিগ্রই পানীয় জলের ব্যাবস্থা করছি আমরা।

 

 

এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা প্রজন্মের পর প্রজন্ম জলকষ্টে ভোগা গ্রামবাসীরা কি মুক্তি পাবে তাদের কষ্ট থেকে নাকি একই ভাবে নদীবক্ষ খুঁজে জোগাড় করেই দিন কাটাতে হবে, কি ভূমিকা নেয় প্রশাসন এটার দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *