ভারতের হয়ে ক্রিকেটের ময়দানে নামবেন বর্ধমানের শ্রীলেখা

সব রকম প্রতিবন্ধকতাকে এড়িয়ে নিজের লক্ষ্যে ছুটে চলেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের শ্রীলেখা রায়। অনূর্ধ্ব ১৯ শ্রীলেখা সুযোগ পেলেন ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে ভারতীয় (এ) দলের হয়ে খেলার। দারিদ্রতা ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে শ্রীলেখার গায়ে উঠতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি।শ্রীলেখা গ্রামে ফিরতেই এলাকাজুড়ে ছড়িয়েছে খুশির হাওয়া।

ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের কিশোরী শ্রীলেখা। ছোট থেকেই ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ দরিদ্র পরিবারের শ্রীলেখার। অনুশীলনও করত সে। আট বছর আগে বাবার মৃত্যুতে ভাঙতে বসেছিল শ্রীলেখার স্বপ্ন। যদিও হাল ছাড়েননি শ্রীলেখা। রাস্তায় ঘুরে ঘুগনি বিক্রি করে সংসারের দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি অনুশীলনও চালিয়েছেন তিনি।

২০১৫ সাল থেকে ভাতার অগ্রগামী ক্রিকেট একাডেমিতে শ্রীলেখা শুরু করেন ক্রিকেট প্রশিক্ষন। প্রশিক্ষক অনির্বাণ হাজরা, নীলকন্ঠ পাঁজা ও রাহুল আলমের হাত ধরে তার পথচলা শুরু। প্রথমে জেলাস্তরে ফিল্ডিং করার সুযোগ পায় শ্রীলেখা। কয়েক মাস দুর্গাপুরে প্রশিক্ষণ নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় সে। এরপর একের পর এক সাফল্য আসে শ্রীলেখার ঝুলিতে।

ইতিমধ্যেই তাঁকে সম্বর্ধনা জানানো হয় ভাতার অগ্রগামী সংঘের পক্ষ থেকে। আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয় শ্রীলেখাকে। তাঁর ক্রিকেটের হাতে খড়িই এই ক্লাবের উদ্যোগে হয়েছিল। সেই ক্লাবের সদস্যরাই আজ তাঁকে সংবর্ধনা দিলো। এদিন উপস্থিত ছিলেন ভাতার বিধানসভার বিধায়ক মান গোবিন্দ অধিকারী, প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরা সহ অন্যান্যরা ।

শ্রীলেখা রায় জানান, প্রথমে সি.এ.বি লিগে ২০১৭-১৮ বর্ষে অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দলের হয়ে মিজোরামে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দলের হয়ে পাঁচটি একদিনের ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। তারপরই তিনি খবর পান অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা ক্রিকেট চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে ভারতের হয়ে তাঁর নাম নির্বাচিত হয়েছে।

গ্রামবাংলা থেকেও মহিলারা যদি ভালো কোচিং পায় তাহলে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাবে। যেমন সে পেয়েছেন। ভবিষ্যতে ভারতের হয়ে খেলায় তার একমাত্র লক্ষ্য বলে জানান তিনি। এ দিকে ভাতার বিধানসভার বিধায়ক মান গোবিন্দ অধিকারী জানান, শ্রীলেখা যেভাবে সকলের মুখ উজ্জ্বল করেছে তাতে তিনি গর্বিত। এ ছাড়াও তিনি বলেন, কোন অসুবিধা হলে তিনি সব সময় শ্রীলেখার পাশে থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *