কালিয়াগঞ্জ এর বিজেপি বিধায়কের তৃণমূলে যোগদান
আরও এক ধাক্কা বঙ্গ বিজেপিতে। গত কয়েকদিনে একের পর এক উইকেট পড়ছে বিজেপিতে। বিধানসভা নির্বাচন শেষ হতেই তৃণমূলে ফেরেন মুকুল রায়। এরপরেই শোনা গিয়েছিল যে কাকে কাকে তৃণমূলে ফেরানো হবে সেই প্রস্তুতি নাকি শুরু হয়ে গিয়েছে।
এমনকি মুকুল রায়ের তৃণমূলে যোগদানের দিনেই নাকি একাধিক বিজেপি বিধায়কের কাছে ফোন গিয়েছিল।শুধু তাই নয়, মুকুলের তৈরি তালিকা নিয়ে দফায় দফায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙে বৈঠকও হয়েছিল। এরপর সবুজ সঙ্কেত মিলতেই বিজেপিতে ভাঙন শুরু।
তৃণমূলে যোগ দিলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক। উত্তরবঙ্গে বিজেপিতে বড়সড় একটা ভাঙনের আশঙ্কা ছিল। আর সেই আশঙ্কা সত্যি করেই এদিন বিজেপি ছেফে তৃণমূলে যোগ দিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টপাধায়ের হাত ধরে এদিন তৃণমূলে ফেরেন সৌমেন।
এহেন দলবদলের পর পার্থবাবু বলেন, ভোটের আগে বহু নেতাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। ভেবেছিল তাঁদের নিয়ে রাজ্যে সরকার গঠন করবে। কিন্তু এতে আমরা বিচলিত ছিলাম না। বরং তৃণমূলের তরফে বারবার বলা হয়েছে যে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকে লাইন পড়ে যাবে। আর সেটাই হচ্ছে।
সৌমেনবাবুর প্রসঙ্গ টেনে পার্থ চট্টপাধ্যায় আরও বলেন, ইনি বিজেপিতে জিতলেও তৃণমূলে ফেরার জন্যে আবেদন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। আর সেই মতো সবাই মিলে বসে সৌমেন রায়কে দলে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহাসচিব।
অন্যদিকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে সৌমেন বলেন, “আমি ছাত্রজীবন থেকেই তৃণমূলে আছি। ঘটনাচক্রে আমি বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করি। কিন্তু আমার মন-প্রাণ তৃণমূল কংগ্রেসেই পড়ে ছিল।” তবে ভোট পরিস্থিতিতে তৃণমূলের পাশে না থাকার জন্যে ক্ষমা চেয়ে নেন সদস্য প্রাক্তন এই বিজেপি নেতা।
অন্যদিকে গত কয়েকদিনে তিন-তিনটে বিধায়ককে কার্যত ছিনিয়ে নিয়ে মাস্টারস্ট্রোক তৃণমূলের। অনেকে বলছে বঙ্গে নাকি খেলা ঘুরতে শুরু করেছে। তবে এই পরিস্থিতিতে নতুন করে আরও এক বিজেপি বিধায়কের দলত্যাগে আরও শক্তিক্ষয় বঙ্গ বিজেপিতে।
এক ধাক্কাতে সংখ্যাটা এসে দাঁড়াল ৭১-এ। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, আগামী কয়েকদিনে বিজেপির আরও কয়েকটি উইকেট পড়বে। বিশেষত উত্তরবঙ্গ থেকে একের পর এক উইকেটের পতন ঘটতে পারে বলে অনুমান।
উল্লেখ্য, সপ্তাহের শুরুতেই বনগাঁর বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। এরপর বিশ্বজিত্ দাস যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। আর সপ্তাহের শেষে আরও এক বিজেপি বিধায়ককে ছিনিয়ে নিয়ে কার্যত বিজেপিকে গোল তৃণমূল সুপ্রিমোর।
যদিও গত কয়েকদিন আগেই বিজেপি বিধায়কদের দলত্যাগ প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, সমস্ত দলত্যাগ বিধায়কদের বিরুদ্ধে করা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হবেই।
তবে তৃণমূলের অবশ্য অনেকে বলছেন, শিশির অধিকারীর আগে তৃণমূলের সাংসদ পদ ত্যাগ করা উচিত্। তবে একের পর এক বিজেপি বিধায়কের দলত্যাগ প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত বিজেপির কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ওয়ান ইন্ডীয়ার এক ফেসবুক লাইভে বিজেপি নেতা বিমলশঙ্কর নন্দ জানিয়েছেন, ভয় দেখানো হচ্ছে বিধায়কদের। আর সেই কারণে এভাবে তৃণমূলে যেতে তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন।