সৌরভের গায়ে শেষমেষ রাজনীতির রং? জল্পনা তুঙ্গে
সৌরভের রাজনীতিতে যোগদান করা নিয়ে তোলপাড় সারাবাংলা। অতীতে যোগদান করলেও শেষমেশ তিনি যোগ দেবেন কোন দলে? প্রশ্ন সব মহলে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে
সৌরভের রাজনীতিতে যোগদান করা নিয়ে তোলপাড় সারাবাংলা। অতীতে যোগদান করলেও শেষমেশ তিনি যোগ দেবেন কোন দলে? প্রশ্ন সব মহলে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে সৌরভকে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করছে বাংলার প্রায় সব প্রধান দলই। কিন্তু প্রত্যেকবারই দক্ষতার সঙ্গে রাজনীতির বিষয়টি সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এখনকার সভাপতির সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলেরই সুসম্পর্ক কিন্তু কারোরই অজানা নয়। শুক্রবার সৌরভের বাড়িতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহর নৈশভোজে যাওয়া এবং শনিবার একটি অনুষ্ঠানে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পাশে বসে সেই সৌরভেরই “মুখ্যমন্ত্রী আমার কাছের মানুষ” বলার মধ্য দিয়ে তা আবার প্রমাণিত। বাম আমলে তৎকালীন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য সৌরভের বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তার আমন্ত্রণে সৌরভ শিলিগুড়িতে স্টেডিয়াম উদ্বোধনেও গিয়েছিলেন।
২০২১ সালে যখন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন, তখন অশোক ভট্টাচার্য তাঁকে দেখতেও গিয়েছিলেন। ঠিক তারপরের দিনই তিনি জানান, সৌরভকে নাকি রাজনীতিতে আসার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। সৌরভের অসুস্থতার কারণ হিসেবে সেই চাপকে দায়ী করেছেন তিনি। তিনি নিজে সৌরভকে রাজনীতিতে না আসার পরামর্শ দেন। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল না বিরোধী দল বিজেপি সৌরভকে রাজনীতিতে আসার জন্য চাপ দিচ্ছে সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানাননি।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টচার্যেরও ঘনিষ্ট ছিলেন সৌরভ। তাদের সম্পর্ক এতটাই ভালো ছিল যে, একটা সময়ে জগমোহন ডালমিয়ার বিরুদ্ধে চলে যান সৌরভ। তবে অনেকেই মনে করছেন, ডালমিয়াকেই মেন্টর।হিসেবে মানতেন সৌরভ। ২০০৬ সালে বাংলার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সিএবি-র নির্বাচনে সভাপতি পদে ডালমিয়ার বিরুদ্ধে প্রার্থী হন কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়। তাঁকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছিলেন বুদ্ধদেব। সৌরভও সমর্থন করেছিলেন প্রসূনকে। ভোটে শেষ পর্যন্ত ডালমিয়াই জয়ী হন। ২০১৫ সালে ডালমিয়ার প্রয়াণের পর সৌরভই সিএবি-তে তাঁর চেয়ারে বসেন।
ইতিহাস যাই হোক না কেন। একুশের নির্বাচনের আগে সৌরভ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি রাজনীতিতে আসতে কোনোভাবেই আগ্রহী নন। এদিকে আবার শুক্রবার সৌরভের বাড়িতে অমিত শাহের নৈশ ভোজের আয়োজন আর শনিবার একটি অনুষ্ঠানে দাদার মুখে “দিদি আমার কাছের মানুষ” বলার মধ্য দিয়ে সৌরভের রাজনীতিতে যোগদানের জল্পনা বেশ খানিকটা উস্কে গিয়েছে।