বর্ধমানে একদিনে আক্রান্ত ৬২৫ , সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ , জারি নতুন বিধিনিষেধও
সাম্প্রতিক করোনা স্ফীতির জেরে লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে পূর্ব বর্ধমানে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এই জেলায়। এর মধ্যে শুধু বর্ধমান শহরেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৯২ জন। সংক্রমণ ছড়িয়েছে হাসপাতালের চিকিত্সক-নার্স এমনকি স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যেও। পরিস্থিতি দেখে বর্ধমান জুড়ে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্ধমান জেলা প্রশাসন।সোমবার সকাল থেকেই পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ প্রশাসন মাইকে প্রচার শুরু করেছে বর্ধমান শহর-সহ জেলার অন্যান্য এলাকায়।
যে ভাবে বর্ধমান শহরে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে উদ্বেগে রয়েছে জেলা প্রশাসন। তারা জানিয়েছে, সংক্রমণ বাড়লেও এখনও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কম। তবে যে গতিতে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তাতে ঝুঁকি না নিয়ে এখন থেকেই সবরকম প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে প্রশাসন। সেই মতো বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ-সহ জেলার চিকিত্সা পরিকাঠামো ঢেলে সাজা হচ্ছে। করোনা ঠেকাতে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা এবং অন্যান্য নিয়ম কানুনের প্রচারে পথে নেমেছে পুলিশ। দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবং ভিড় বা জমায়েত ঠেকাতে সোমবার থেকে দোকান বাজার খোলার ব্যাপারেও জারি করা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ।
আপাতত বর্ধমান শহর এবং জনবহুল এলাকায় মূল রাস্তার পাশের সব দোকান একসঙ্গে খোলা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বাজার এলাকা এবং বড় রাস্তার দু’পাশের সার দেওয়া দোকানঘরগুলির একদিকের দোকান খোলা থাকলে অন্যদিকের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। অর্থাত্ সোমবার যদি ডানদিকের দোকান খোলা থাকে, তবে মঙ্গলবার খোলা থাকবে বাঁদিকের দোকানগুলি। অর্থাত্ একদিন অন্তর দোকান খুলতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। কোন দিন কোন এলাকার দোকান খোলা থাকবে তা স্পষ্ট নির্দেশে জানিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। একই সঙ্গে সোমবার মাছ-মিষ্টি-সবজির দোকান বন্ধ থাকবে আর রবিবার সব দোকান বন্ধ রাখতে হবে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন।
যদিও প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী সংগঠনের অন্যতম নেতা সিয়াঞ্জি ওয়াং বলেন, ”এমনিতেই বাজারের অবস্থা ভাল নয়। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আলোচনা করতে পারত।” স্থায়ী দোকান বন্ধ থাকলে ফুটপাথের হকারদেরও বসতে দেওয়া হবে না অনুমান। এ ব্যাপারে হকারদের এক প্রতিনিধি তপনকুমার দাসের বক্তব্য, ”সরকারি সিদ্ধান্ত মানতেই হবে। তবে আমাদের বিক্রি আটকে যাবে। আর একটু দেখে সিদ্ধান্ত নিলে হয়তো ভাল হত।” তবে সাধারণ মানুষ প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়েও আচমকাই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছিল বর্ধমানে। সেই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার তাই সময় থাকতে তৈরি হতে চাইছে তারা।