জিএসটি থেকে যে আয় হবে, তার ৭০ শতাংশই রাজ্যগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হবে : কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী

করোনার সেকেন্ড ওয়েভে কাঁপছে দেশ। সংক্রমণ কমলেও প্রত্যেকদিন প্রায় কয়েক হাজার করে মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর শোনালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। করোনা সংক্রান্ত বেশ কিছু পণ্যের উপর কমল জিএসটি।কমানো হয়েছে রেমিডিজিভির, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সহ একাধিক ওষুধের দাম।

অর্থনীতিবিদদের মতে, জিএসটি কমানোতে এক ধাক্কায় অনেকটাই দাম কমেছে বেশ কয়েকটী পণ্যে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে কোভিড ভ্যাকসিনে কমানো হল না কোনও জিএসটি। সেটিকে পাঁচ শতাংশ রেখে দেওয়া হল।

এতে ক্ষুব্ধ তৃণমূল সহ বিরোধী রাজনৈতিকগুলি। ভ্যাকসিনে জিএসটি না কমানোতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল। কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের কথা ভাবে না বলেও আক্রমণ শানিয়েছে।

কিন্তু কোভিড টিকার উপর থেকে পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) তুলে নেওয়ার প্রশ্নই নেই বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। কেন্দ্রের যুক্তি, টিকা কেনার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। ফলে জিএসটি তুলে নেওয়ার প্রশ্নই এখন নেই বলে মনে করছে অর্থমন্ত্রক।

আজ শনিবার জিএসটি কাউন্সিলের মিটিং ছিল। এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সহ একাধিক অর্থমন্ত্রকের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক মিটতেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

সেখানে তিনি বলেন, ”কোভিড টিকার উপর ৫ শতাংশ জিএসটি বহাল থাকছে। ঘোষণা মতো কেন্দ্রই ৭৫ শতাংশ টিকা কিনবে। তার জন্য জিএসটি-ও দেবে। তবে জিএসটি থেকে যে আয় হবে, তার ৭০ শতাংশই রাজ্যগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, সমস্ত রাজ্যকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে কেন্দ্র। অর্থাত্‍ ১৮ ঊর্ধ্ব সমস্ত দেশবাসীর জন্য বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থা করবে মোদী সরকার। গত কয়েকদিন আগে জাতির উদেশ্যে দেওয়া ভাষণে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেন, ‘সমস্ত রাজ্যকে টিকা কিনে বিনামূল্যে সরবরাহ করবে কেন্দ্র।’ ২১ জুন, আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে থেকে ১৮ ঊর্ধ্ব সব নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হলে বলে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থাত্‍ রাজ্য সরকারকে ভ্যাকসিনের জন্যে আলাদা করে আর কোনও টাকা খরচ করতে হবে না।

কেন্দ্র ৭৫ শতাংশ ভ্যাকসিন কিনে নিতে চাইছে ভ্যাকসিন উত্‍পাদক কাছ থেকে। রাজ্যের জন্যে বরাদ্দ ২৫ শতাংশ ভ্যাকসিনও এর মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে। আর সমস্ত কিছু করেই রাজ্যগুলিতে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিচ্ছে কেন্দ্র।

মোদী সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ধীরে ধীরে এই ভ্যাকসিন আরও বাড়ানো হবে।

অন্যদিকে, করোনা চিকিত্‍সার জন্যে যে সমস্ত সামগ্রীর প্রয়োজন সেগুলিতে জিএসটি কমানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, থার্মোমিটার সহ বেশ কয়েকটি এমন পণ্যের উপর ৫ শতাংশ জিএসটি নেওয়া হবে। অ্যাম্বুল্যান্সের উপর জিএসটি নেওয়া হবে ১২ শতাংশ।

তবে আরটিপিসিআর যন্ত্র, আরএনএ এক্সট্র্যাকশন যন্ত্র, জিনোম সিকোয়েন্সিং যন্ত্রের উপর আগের মতোই ১৮ শতাংশ জিএসটি বহাল থাকবে। জিনোম সিকোয়েন্সিং কিটের উপর আগের মতোই ১২ শতাংশ জিএসটি নেওয়া হবে।

পাল্‌স অক্সিমিটারের উপর থেকেও জিএসটি কমিয়ে ১২ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারের উপর এ বার থেকে ১৮ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ জিএসটি বসবে। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রেও একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *